বিক্রম রায়, কোচবিহার: দিনভর টিভির স্ক্রিন থেকে নজর সরেনি সোমা তালুকদারের। একটি খবরের চ্যানেল বদলে আরেকটি খবরের চ্যানেল। তবে মঙ্গলবার সকাল গড়িয়ে দুপুর, তার পর বিকেল হয়ে যায়। অবশেষে সন্ধ্যা ৭টার পর মেলে স্বস্তির খবর। একটানা ১৭ দিনের উদ্বেগ উৎকণ্ঠার যেন সমাপ্তি ঘটল। উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীতে যে সুড়ঙ্গে তাঁর স্বামী মানিক তালুকদার-সহ মোট ৪১ জন আটকে পড়েছিলেন, তাঁদের বের করার কাজ শুরু হতেই সোমাদেবীর চোখ দুটো জলে ছল-ছল করে ওঠে।
স্বামী উদ্ধার হওয়ার পর ভিডিও কলে তাঁর সঙ্গে কথা বলার পর শাঁখ বাজিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন সোমা তালুকদার। একে একে শ্রমিকদের বের করা হচ্ছে দেখে উচ্ছ্বাসে কার্যত মেতে ওঠেন মানিক তালুকদারের ছেলে মণি তালুকদার। হবেই বা না কেন। একটানা ১৭ দিন ধরে এই সময়ের অপেক্ষায় ছিলেন তাঁরা। বারবার ব্যাহত হচ্ছিল উদ্ধারকাজ। স্বাভাবিকভাবে বাড়ছিল উদ্বেগ। তবে এদিন সেই উদ্বেগ কাটিয়ে অবশেষে সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধার হন মানিক তালুকদার-সহ সকলে। সুড়ঙ্গ থেকে বেরিয়ে এসে পরিবারকে ভিডিও কলে মানিক বলেন, “সুস্থ আছি। ভালো মতো সবাইকে উদ্ধার করা হয়েছে। এখন চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।”
[আরও পড়ুন: ডার্বি নিয়ে জট অব্যাহত, IFA-কে কড়া চিঠি মোহনবাগানের, না খেলেই জিতবে ইস্টবেঙ্গল?]
মানিক তালুকদারের স্ত্রী সোমা তালুকদার বলেন, এখন ভালো লাগছে। স্বামীর সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন সুস্থ আছেন। উদ্ধার কাজে সবাই সহযোগিতা করেছেন। তাদের প্রচেষ্টা সফল হয়েছে। তার জন্য তিনি চিরকৃতজ্ঞ থাকবেন। মানিক তালুকদারের ছেলে মণি তালুকদার অবশ্য বাবার উদ্ধারে অত্যন্ত খুশি হলেও এই রাজ্যে রোজগার সমস্যার কারণে শ্রমিকদের ভিনরাজ্যে যেতে হচ্ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
তুফানগঞ্জের বলরামপুর এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের চেকাডোরা গেরগেন্দারপাড় এলাকার বাসিন্দা মানিক তালুকদার। তাঁর আটকে পড়ার খবর শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েছিল গোটা পরিবার। এর পর উদ্বেগে কেটেছে ১৬টা দিন। মাঝে অসুস্থও হয়ে পড়েছিলেন মানিক তালুকদারের স্ত্রীর। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁর চিকিৎসার উপযুক্ত ব্যবস্থা করা হয়। অবশেষে উৎকণ্ঠার ইতি।
[আরও পড়ুন: ঈশ্বরের কৃপায় সংকটমোচন! খুশির হাওয়া পুরশুরায়, স্বস্তিতে বাংলার ২ শ্রমিকের পরিবার]
Source: Sangbad Pratidin