স্টাফ রিপোর্টার: আগের দিনই মোহনবাগানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল ৩০ নভেম্বর ডার্বি খেলা সম্ভব নয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আইএফএ-র পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় নির্দিষ্ট দিনে মোহনবাগান না খেললে ডার্বিতে ওয়াকওভার পাবে ইস্টবেঙ্গল। মঙ্গলবার ফের সিদ্ধান্ত বদলে ডার্বির জন্য নতুন দিন ঠিক করার জন্য আইএফএ-র কাছে আবেদন করে মোহনবাগান সুপার জায়েন্ট কর্তারা। লিখিত না দিলেও মৌখিকভাবে আইএফএ কর্তাদের কাছে তাঁদের অনুরোধ, ডার্বি ম্যাচটি ২৮ ডিসেম্বরের পর কোনও একদিন দিতে। যা সরাসরি প্রত্যখ্যান করেছেন আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত। এদিন মোহনবাগানের চিঠি পাওয়ার পর আইএফএ অফিসে বসে তিনি বলেন, “মাত্র একটা ম্যাচের জন্য লিগ এতদিন সরিয়ে রাখা সম্ভব নয়। এতে সম্প্রচারকারী সংস্থারাও বিরক্ত হচ্ছে। আমাদের স্পনসরশিপেও নানা সমস্যা হবে। তাই ডার্বি ম্যাচের দিন ৩০ নভেম্বরই থাকছে।” স্বাভাবিকভাবেই এই মরশুমের কলকাতা লিগ ডার্বি ছাড়াই শেষ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
ডার্বি খেলা নিয়ে মোহনবাগানের সঙ্গে অনেকদিন ধরেই চিঠি দেওয়া-নেওয়া হচ্ছে আইএফএ-র। তারপরেও দু পক্ষই কোনও একটি নির্দিষ্ট তারিখে ডার্বি করা নিয়ে সিদ্ধান্তে আসতে পারছিল না। কারণ, মোহনবাগান শুধু কলকাতা লিগ বা আইএসএল নয়, এএফসি কাপে খেলা নিয়েও ব্যস্ত। যা তারা প্রতিটি চিঠিতে আইএফএ-কে উল্লেখ করেছে। আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্তের দাবি, মোহনবাগান কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেই সব দিক বিবেচনা করে ৩০ নভেম্বর ডার্বির তারখি করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গেই আইএফএ সচিবকে রীতিমতো তুলোধোনা করে চিঠি দিয়েছে মোহনবাগান। আইএফএ সচিবের বক্তব্যকে সম্পূর্ণ মিথ্যে কথা বলে উল্লেখ করে মোহনবাগান চিঠিতে লিখেছে যে, ডুরান্ড কাপের প্লে অফ, এএফসি এবং আইএসএল খেলার সময় ছাড়া মোহনবাগানের তরফ থেকে কখনও ম্যাচ পরিবর্তনের অনুরোধ করা হয়নি।
একই সঙ্গে মোহনবাগান থেকে বলা হয়েছে, অন্য প্রতিযোগিতায় খেলার জন্য বেশ কিছু খেলার দিন পরিবর্তন করে সেপ্টেম্বরে একটি দলের খেলা শেষ করে দিয়েছে আইএফএ। তারপরেও কলকাতা লিগ খেলার জন্য মোহনবাগান টানা অনুশীলন করে গিয়েছে। অথচ, সবুজ-মেরুনের জন্য একটিও ম্যাচ দেওয়া হয়নি। হঠাৎই দেখা গেল ২৫ নভেম্বর আইএফএ-র তরফে জানানো হল ৩০ নভেম্বর ডার্বি ম্যাচ। আর এর থেকে স্পষ্ট, একটি দলকে ডার্বিতে টানা সুবিধে পাইয়ে দেওয়ার জন্যই এইরকম ক্রীড়াসূচি করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: জলে গেল ঋতুরাজের সেঞ্চুরি, বিশ্বকাপের স্মৃতি ফিরিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে জেতালেন ম্যাক্সওয়েল]
মোহনবাগান সুপার জায়েন্টের তরফ থেকে জানানো হয়েছ, ২৭ নভেম্বর তাদের আইএসএলে ম্যাচ ছিল। পরের ম্যাচ ২ ডিসেম্বর। দল অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে বাইরে যাবে ৩০ নভেম্বর। তাহলে সেই দিনে কীভাবে ডার্বি খেলতে পারে মোহনবাগান। পাশাপাশি ইস্টবেঙ্গল ক্লাব তাদের শেষ ম্যাচ খেলেছে ২৫ নভেম্বর। পরের ম্যাচ ৪ ডিসেম্বর। অনেক দিনের বিশ্রাম পাচ্ছে। অথচ মোহনবাগানকে এএফসি কাপ খেলে দু দিনের বিশ্রাম নিয়েই ডার্বি খেলতে হবে। এরপরেও সবুজ-মেরুনের অনুরোধ রাখা হয়নি। অথচ ইস্টবেঙ্গল-ভবানীপুর ম্যাচ ১৪ তারিখ থেকে বদলে ১৮ নভেম্বর করে দেওয়া হয়।
মোহনবাগান সবচেয়ে অবাক আইএফএ থেকে নাকি ৩০ তারিখ সকালে ম্যাচ খেলতে বলা হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত বলেন, “আমি কখনই ৩০ নভেম্বর সকালে ম্যাচ খেলে বিকালে অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে উড়ে যাওয়ার কথা বলিনি। বলেছিলাম, এখন যেহেতু শীতকাল তাই ম্যাচের সময় একটু এগিয়ে আনা যেতে পারে। আর বারবার করে মোহনবাগানের সঙ্গে কথা বলেছি ডার্বির দিন ঠিক করা নিয়ে, কখনও এএফসি, কখনও আইএসএল ম্যাচ রয়েছে মোহনবাগানের। ফলে সবসময় চেষ্টা করেছি মোহনবাগানের যেন ডার্বি খেলতে অসুবিধা না হয়। সব দেখে শুনেই ৩০ নভেম্বর ডার্বির দিন ফেলা হয়েছে। এরপরেও যদি মোহনবাগান সহযোগিতা না করে তাহলে আইএফএ-র আর কিছু করার নেই।”
এদিন মোহনবাগান সুপার জায়েন্টের পাশাপাশি মোহনবাগান ক্লাবের পক্ষ থেকেও বকেয়া চেয়ে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে আইএফএ-কে। সেই প্রসঙ্গে আইএফএ সচিব বলেন, “এই মুহূর্তে আইএফএ-র আর্থিক অবস্থা ভালো নয়, ওঁদের কি পাওনা আছে দেখতে হবে। এর আগেও বকেয়ার একটা অংশ পেয়ে প্রতিশ্রুতি মতো কলকাতা লিগের ম্যাচ খেলেনি মোহনবাগান।”
Source: Sangbad Pratidin