ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম হঠাৎ কংগ্রেসকে নিশানা করলেন কেন! তবে কি রাজ্যে সিপিএম-কংগ্রেস জোটে ফাটল ধরল! ইন্ডিয়া (INDIA Alliance) জোটের পরিপন্থী হলেও বঙ্গে তারা এখনও পরস্পরের হাত ধরে চলছে তৃণমূলের (TMC) বিরোধিতায়। তার মধ্যে সেলিমের ভাষণে নতুন জল্পনা তৈরি হয়েছে প্রদেশ কংগ্রেসে। এই পরিস্থিতিতে সেলিমকে জবাব দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তাঁর সাফ কথা, “বামেদের সঙ্গে যে জোট হয়েছিল তা বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বা প্রাক্তন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রদের সঙ্গে কথা বলে। এখন কে কী বলছে জানি না। আমরা একাও লড়তে পারি। তাতে আমাদের কোনও ভয় বা দ্বিধা নেই।”
অধীর যে সেলিমকেই এই জবাব দিয়েছেন তা স্পষ্ট হলেও, আচমকা সেলিম কেন কংগ্রেসকে নিশানা করতে গেলেন, তার ব্যাখ্যাও খোঁজার পালা চলছে। কংগ্রেসের একটা বড় অংশের বক্তব্য, “পাঁচ রাজ্যে কংগ্রেসের জয়ের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বুঝেই সিপিএম দর কষাকষি করে নিতে চাইছে। কেন্দ্রে ইন্ডিয়া জোট হলেও রাজ্যে বাম ও আইএসএফের সঙ্গেই জোট করে কংগ্রেস লড়বে বলে ঠিক ছিল। এখন পরিস্থিতি বদলেছে। সিপিএম সেটা বুঝতে পারছে বলেই কংগ্রেসকে নিশানা করছে।” এই প্রসঙ্গে আরেকটি কথা মনে করিয়েছেন রাজ্য ফরওয়ার্ড ব্লকের একা শীর্ষ নেতা। তাঁর বক্তব্য, “তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের সমঝোতা না হলে বহরমপুরে অধীর চৌধুরীর আসনই টলমল হবে। সে কথা দিল্লিতে চাউর হয়ে গিয়েছে। সিপিএম সেটা জানে। সেলিম সাহেব তাই পরিস্থিতি উসকে কংগ্রেসের জবাব চাইছে।” তৃণমূলের এক রাজ্য নেতার অবশ্য বক্তব্য, “সবটাই লোক দেখানো। রাজ্যে ইন্ডিয়া মানেই তৃণমূল। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বেই দিল্লিতে পালাবদল হবে। চাপে পড়ে তাই সিপিএম-কংগ্রেস নিজেদের পুরনো অবস্থান থেকে সরে আসতে ফাটলের গল্প ফাঁদছে।”
[আরও পড়ুন: জগদ্ধাত্রী পুজোয় বাড়ির আলো ঠিক করতে গিয়ে অঘটন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু স্কুলছাত্রের]
তবে বাম-কংগ্রেস ফাটল চওড়া হলেও তার দায় সিপিএমেরই হবে বলে স্পষ্ট করে দিতে চেয়েছেন অধীর। তার মধ্যে সেলিমের বক্তব্য সিপিএমের অন্দরেই ধন্দ্ব তৈরি করছে বলে দাবি প্রদেশ সভাপতির। তাঁর কথায়, “আমাদের সমালোচনা করার আগে জানতে হবে কেন তার প্রয়োজন পড়ছে। তা না হলে আপনাদের লোকেরাও হতাশ হবে।” এর পরই তিনি বলেছেন, “আমি কিন্তু বিমানবাবু বা সূর্যকান্ত মিশ্রদের সঙ্গে জোট করেছিলাম। বাকি নেতাদের চিনি না। সেলিম ভাইকে আমি যতটা সিপিএম নেতা হিসাবে চিনি, তার থেকেও বেশি চিনি প্রাক্তন সাংসদ হিসাবে। অতএব কে কী বলছে জানি না। বিমানবাবুর সঙ্গে যে জোট আমাদের হয়েছিল সেটা আমি ভাঙিনি।” আরেক প্রদেশ নেতা শুভঙ্কর সরকার সেলিমের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, “ইউপিএ সরকার থেকে সিপিএম সমর্থন সরিয়ে নিয়েছিল। সেটা যেন তঁারা মনে রাখেন। সেই কারণেই ২০১১ সালে তৃণমূলের সঙ্গে জোট করতে হয়েছিল।” প্রসঙ্গত, অভিষেক-রাহুলের বৈঠক নিয়ে কংগ্রেসকে নিশানা করেছেন মহম্মদ সেলিম। বলেন, “বাংলা যখন বাম-কংগ্রেস শাসকদলের বিরুদ্ধে সরব হচ্ছে তখন রাহুল কোন যুক্তিতে অভিষেকের সঙ্গে বৈঠক করেন?”
[আরও পড়ুন: জিভের ডগায় বিশ্বকাপ! ট্রফির আদলে অতিকায় সন্দেশ দেখে তাজ্জব কালনাবাসী]
Source: Sangbad Pratidin