ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: বৃহস্পতিবার রাতেই সমস্ত নথি ফাইল বন্দি করে প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। ঠিক ছিল, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার মধ্যে হাসপাতালে চলে আসবেন এসএসকেএমের শীর্ষকর্তারা। এবং সঙ্গে যাবেন এমন এক মেডিক্যাল অফিসার যাতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি-র হাতে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকুকে হস্তান্তর করতে সমস্যা না হয়। কিন্তু ফের সমস্যার শুরু বৃহস্পতিবার রাত ১২টা নাগাদ।
কার্ডিওলজি বিভাগের এক নম্বর কেবিনে ভর্তি রয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ (Sujay Krishna Bhadra)। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই দিন রাতে আচমকাই তাঁর রক্তচাপ কমতে শুরু করে এবং নাড়ির গতি (পালস রেট) মারাত্মক বেড়ে যেতে থাকে। এর পরেই তড়িঘড়ি সুজয়কৃষ্ণকে কার্ডিওলজি বিভাগের ক্রিটিক্যাল কেয়ারে স্থানান্তরিত করা হয়। যার ফলে শুক্রবার সকালে তাঁকে আর জোকা ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। আইসিইউ (ICU) অ্যাম্বুল্যান্স থাকা সত্ত্বেও কেন সুজয়কৃষ্ণকে নিয়ে যাওয়া যাবে না তা নিয়ে ইডির আধিকারিকরা প্রশ্ন তোলেন বলে সূত্রের খবর। জানা যাচ্ছে, মেডিক্যাল বোর্ডের তরফে জানানো হয়, বাইপাসের পরে এমন অবস্থা হলে রোগীকে ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করে তার পরে অ্যাঞ্জিওগ্রাফি করার প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রেও তাই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এর পরে ওই চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র নিয়ে ইডির আধিকারিকরা চলে যান বলে খবর।
[আরও পড়ুন: টাকার টোপ দিয়ে পাচারের ছক! পুলিশি তৎপরতায় উদ্ধার ৩ নাবালিকা]
আর এই ঘটনাতেই ফের বিতর্ক দানা বেঁধেছে। অভিযোগ উঠছে এসএসকেএমের পক্ষপাতিত্ব নিয়ে। যদিও তা মানতে নারাজ চিকিৎসকেরা। তাঁদের একাংশের দাবি, ‘‘অন্য রোগীর ক্ষেত্রে যা সুপারিশ করা হয়, এক্ষেত্রেও তাই করা হয়ছে। এর থেকে বেশি কিছু নয়। ইডি মনে করলে তো বন্ড দিয়ে নিয়ে যেতেই পারেন। সেখানে অহেতুক আমাদের কেন প্রশ্নের মুখে ফেলা হচ্ছে।’’ পিজি হাসপাতালেই প্রথম ধরা পরে সুজয়কৃষ্ণের ‘ট্রিপল ভেসেল ডিজিজ’ রয়েছে। অর্থাৎ তাঁর প্রধান তিনটি হৃদ-ধমনীতে ব্লকেজ ছিল। এর পরে বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর বাইপাস হয়। এর কিছু দিন পরে বুকে যন্ত্রণা শুরু হলে জেল কর্তৃপক্ষ সুজয়কৃষ্ণকে পিজিতে ভর্তি করে। এর কিছু দিন পরে চিকিৎসায় যুক্ত এক চিকিৎসককে ইডি যেদিন জিজ্ঞাসাবাদ করে, সেদিন রাতেই আচমকা হৃদস্পন্দন মারাত্মক বেড়ে যায় সুজয়কৃষ্ণের। তড়িঘড়ি পাঠানো হয় সিসিইউতে।
সূত্রের খবর, পরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা বোঝেন, মানসিক চাপ থেকেই এমনটা হচ্ছে সুজয়কৃষ্ণের। তখন থেকে মেডিক্যাল বোর্ডে দুই মানসিক রোগের চিকিৎসককে রাখা হয়। চিকিৎসকদের একাংশের এটাও দাবি, ‘‘বাইপাসের পরে যখন সমস্যা হল, তখনই তো যেখানে ওই অস্ত্রোপচার হয়েছিল সেখানে নিয়ে যাওয়া উচিত ছিল। কেউ অসুস্থ হয়ে এলে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া আমাদের কর্তব্য। আর চিকিৎসার সব কাগজপত্রই তো দেওয়া হচ্ছে।’’
[আরও পড়ুন: বামেদের রুচি বদল! মীনাক্ষীর ইনসাফ যাত্রা মাতাচ্ছে হিন্দি ছবির গান]
Source: Sangbad Pratidin