সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজাউম’। সোমবার প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে বঙ্গোপসাগরের উপর দিয়ে উত্তর-পশ্চিমে এগোচ্ছে বছর শেষের এই ঘূর্ণিঝড়। আজ, মঙ্গলবার দুপুরে মছলিপত্তনম এবং নেল্লোরের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলে আছড়ে পড়বে সেটি। তখন ঘূর্ণিঝড়ের গতি থাকতে পারে ঘণ্টায় ৯০-১০০ কিলোমিটার। ইতিমধ্যেই ভারী বৃষ্টির জেরে বানভাসি চেন্নাইয়ে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের।
সোমবার থেকেই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু জুড়ে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আগামী দুদিন মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে পুদুচেরি, করাইকানাল, ইয়ানাম-সহ একাধিক জায়গায়। চেন্নাইয়ের নিচু এলাকাগুলোতে জল ঢুকছে। এর মধ্যেই সোশাল মিডিয়ায় দেখা গিয়েছে, বানভাসি বহু এলাকা। চেন্নাইয়ের পেরুনগালাতুর এলাকায় রাস্তার উপরেই একটি কুমির ঘুরে বেড়াচ্ছে। ভাইরাল হয়েছে সেই ভিডিও। জলের তোড়ে ভেসে যাচ্ছে পার্কিং লটে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িগুলো।
[আরও পড়ুন: পান্নুনকে হত্যার ছকের তদন্ত ঠিক পথে হচ্ছে! খতিয়ে দেখতেই কি ভারতে বাইডেনের উপদেষ্টা?]
ঘূর্ণিঝড় ও বৃষ্টিপাতের জেরে এদিন থেকেই চেন্নাই (Chennai) এবং সংলগ্ন জেলাগুলোতে সরকারি স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশ ও পুদুচেরিতে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী দুদিনের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। বেসরকারি অফিসগুলোও কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে। বিধ্বস্ত চেন্নাই বিমানবন্দরও। জলের তলায় রানওয়ে। বিপর্যস্ত বিমান চলাচল। রাত ১১টা পর্যন্ত বন্ধ পরিষেবা। ১২টি অভ্যন্তরীণ বিমান এবং ৪টি আন্তর্জাতিক বিমান বাতিল করা হয়েছে। কয়েকটি বিমান বেঙ্গালুরুতে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাতিল হয়েছে বহু ট্রেনও। রাতভর ভারী বৃষ্টির দাপটে ব্যাহত হয়েছে বিদ্যুৎ পরিষেবাও। চেন্নাইয়ের বেশ কয়েকটা এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। বিঘ্নিত হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবাও। ঝুঁকি এড়াতে শহরের অন্যতম বাসিন ব্রিজে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়েছে। বাতিল হয়েছে ৬টি ট্রেন। জলে ভরে যাওয়ায় ১৪টি সাবওয়ে বন্ধ করেছে প্রশাসন। সব মিলিয়ে দুর্যোগ পরিস্থিতি ঘোরতর হচ্ছে চেন্নাইয়ে।
[আরও পড়ুন: মিজোরামের মসনদে ইন্দিরার প্রাক্তন দেহরক্ষী! কে এই লালডুহোমা? ]
বঙ্গোপসাগরের উপরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজাউম’-এর নাম দিয়েছে মায়ানমার। ঝড়ের মোকাবিলায় আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ ও পুদুচেরিতে। ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় উপকূলের মানুষজনকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। নামানো হয়েছে প্রচুর পুলিশ। ইতিমধ্যেই পাঁচ হাজার ত্রাণকেন্দ্র তৈরি করেছে তামিলনাড়ু সরকার। ঘূর্ণিঝড়ের ফলে দক্ষিণ ওড়িশার পাঁচটি জেলা মালকানগিরি, কোরাপুট, রায়গাদা, গজপতি এবং গঞ্জামে ভারী বৃষ্টির সতর্কবার্তা দিয়েছে মৌসম ভবন। পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের তেমন কোনও প্রভাব পড়বে না। তবে দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায় বৃষ্টি হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
Source: Sangbad Pratidin