সুমন করাতি, হুগলি: ১৭ দিনের দীর্ঘ অপেক্ষার পর আলোর মুখ দেখেছেন উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে থাকা ৪১ শ্রমিক। এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন উদ্ধারকারীরা। যাঁরা নিজেদের জীবন বাজি রেখে ৪১টি পরিবারের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন। এই কৃতিত্বে জুড়ে গিয়েছে সিঙ্গুরের নাম। বিশেষ এক ক্যামেরার মাধ্যমে পাহাড়ের পেটে আটকে পড়া ছেলেদের প্রথমবারের জন্য দেখা পেয়েছিল তাঁদের আপনজনেরা। সৌজন্যে সিঙ্গুরের কিসমৎ অপূর্বপুরের সিঙ্গুর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ছেলে দৌদীপ খাঁড়া।
এন্ডোস্কপিক ক্যামেরার সাহায্যে পেটের ভিতরের রোগ নির্ণয় করা হয়। খানিকটা সেই পদ্ধতিতেই সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিকদের ছবি তুলে ধরা হয়েছিল পরিবারের কাছে। যা দেখে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছিল পরিবারগুলি। সুড়ঙ্গে ওই ধসের মধ্যে প্রথমবার ক্যামেরা পাঠানোর পিছনে রয়েছেন এক বেসরকারি পরিকাঠামো নির্মাণ সংস্থার কর্মী দৌদীপ। হুগলি জেলার টিপিআই কলেজে পড়াশোনা সেরে এখন কলকাতা বেসরকারি একটি কলেজে বিশেষ কোর্স করছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: ফিরহাদ হাকিমের সই জাল! আলিপুর জেল মিউজিয়ামে চাকরি দিতে গিয়ে শ্রীঘরে সরকারি কর্মী]
দৌদীপের কৃতিত্বে পরিবারে এবং সিঙ্গুরে এখন খুশির হাওয়া। মা সবিতা খাঁড়া বলেন, “আমরা গর্বিত। খাওয়াদাওয়া করতে পারছি না, এত আনন্দ। ভাবতেই পারছি না যে ছেলে এমন একটা পজিশনে চলে গিয়েছে। টিভিতে প্রথমবার ছেলের এই কৃতিত্বের কথা জানতে পারি। ওঁর বাবার আর আমার আনন্দ বলে বোঝানোর নয়।” সবিতাদেবী আরও জানিয়েছেন, শুক্রবার বাড়ি ফিরবে ছেলে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডেকেছেন তাঁকে। দৌদীপের বাবা বলেন, “ছেলে দেশের জন্য যে কাজ করেছে সেটা ভেবেই গর্ব হচ্ছে। এতজন শ্রমিকের বাড়ির লোক আমাদের ছেলের পাঠানো ক্যামেরার মাধ্যমে তাঁদের ছেলেদের দেখে আশ্বস্ত হতে পেরেছে। সকলের মুখে হাসি ফুটিয়েছে দৌদীপ। এর থেকে আনন্দের আর কী হতে পারে!” সিঙ্গুরের বিডিও বাড়িতে খোঁজ নিতে এসে দৌদীপের ভূয়সী প্রশংসাও করেন।
দৌদীপের শিক্ষক টিপিআই কলেজের অধ্যাপক সৌমেন্দ্রনাথ বসু বলেন, “আমার সাবজেক্ট স্ট্রেন্থ অফ মেটেরিয়াল পরবর্তীতে ওঁর প্রিয় সাবজেক্ট হয়। ওঁর এই সাফল্যে অত্যন্ত গর্বিত। আরও উন্নতি করুক।” টিপিআই কলেজের প্রিন্সিপাল অভিজিৎ কর্মকারের কথায়, “সার্ভে ইজ্ঞিনিয়ারিং নিয়ে ২০১৫ সালে পাস আউট দৌদীপ ভবিষ্যতে আরও অনেক উন্নতি করুক। আমাদের ছাত্র এখন দেশের সকলের গর্ব।।”
[আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee: হায়দরাবাদ উড়ে গেলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়? কারণ কী?]
Source: Sangbad Pratidin