দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: চুরির ‘কাজ’ আছে বলে লাখ টাকা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারই আড়ালে হত্যাকাণ্ডের (Murder case) নিখুঁত ছক কষছিল আততায়ীরা! জয়নগরের তৃণমূল (TMC) নেতা খুনের ঘটনায় ধৃতকে জেরা করে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেলেন তদন্তকারীরা। জানা গিয়েছে, সইফউদ্দিন মণ্ডলকে খুনের জন্য তাঁর বাড়ির সামনে মোতায়েন করা হয়েছিল ধৃত শাহরুল শেখকে। বলা হয়েছিল, চুরির কাজ আছে। তাই নজর রাখতে হবে। গ্রেপ্তারের পর পুলিশের জেরার মুখে এসব কথা স্বীকার করেছে সে। মঙ্গলবার বারুইপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হলে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজত দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত শাহরুল শেখের বয়স ২৩ বছর। তার বাড়ি ডায়মন্ড হারবারের (Diamond Harbour) নেতড়া এলাকায়। চোর, ছিনতাইবাজ হিসেবে কুখ্যাত শাহরুল। পুলিশের জেরায় প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, চুরির (Theft) কাজ আছে বলে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সেই সূত্র ধরে তাকে মৃত তৃণমুল নেতা সইফুদ্দিন লস্করের বাড়ির এলাকাতেই একজনের বাড়িতে চারদিন ধরে রাখা হয় সইফুদ্দিনের গতিবিধি নজরদারির জন্য। শাহরুল জানায়, ভোরবেলা নমাজ পড়তে যান সইফুদ্দিন। আর তার পর ওই সময়টাকেই বেছে নেয় দুষ্কৃতীরা। প্রকাশ্যে এসেছে খুনের আগের মুহূর্তে সিসিটিভি ফুটেজও (CCTV Footage)। তাতে দেখা যাচ্ছে, ভোরবেলা সইফউদ্দিন নমাজ পড়তে যাওয়ার সময় তাঁকে ‘ফলো’ করে কয়েকজন। এর পর দুটি বাইকে চড়ে তারা পিছু ধাওয়া করে তৃণমূল নেতাকে খুন করে।
[আরও পড়ুন: ইন্ডিয়া জোটে ফাটল? জাতিগত জনগণনার সমর্থনে রাহুল, ‘বিশ্বাসঘাতক’, পালটা তোপ অখিলেশের]
‘চুরি’র জন্য নজরদারির কাজে শাহরুলকে এক লক্ষ টাকা বরাত দেওয়া হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। এছাড়া আরও তথ্য মিলেছে। ধৃত শাহরুল শেখ ও সোমবার অভিযুক্ত সন্দেহে যাকে পিটিয়ে মারা হয়েছে, সেই সাহাবুদ্দিন লস্কর একে অপরের পরিচিত। সাহাবুদ্দিনের বাড়ি জয়নগর থানা এলাকার গোদাবর অঞ্চলে। সাহাবুদ্দিন মূলত সাইকেল নিয়ে ডায়মন্ড হারবার এলাকায় যাতায়াত করত। সাহাবুদ্দিন দর্জির কাজ করত। সেই সূত্র ধরেই শাহরুল ও সাহাবুদ্দিনের যোগাযোগ ছিল।
[আরও পড়ুন: পরীক্ষাকেন্দ্রে নিষিদ্ধ হিজাব, পরা যাবে আংটি-মঙ্গলসূত্র, কর্নাটকের নির্দেশে তুঙ্গে বিতর্ক]
এদিকে, সইফউদ্দিন খুনের পর গণপিটুনিতে সাহাবুদ্দিনের মৃত্যুর ঘটনায় ফুঁসছে তার পরিবার। ঘটনার বিচার চাইছেন স্ত্রী জরিনা বিবি। মৃতের মেয়ে রুবিয়া জানান, ঘটনাটি জানার পর তাঁরা বাবার ফোনে ফোন করেছিলেন, কিন্তু কোনও সাড়া পাননি। তাঁর বাবা এ সবের সঙ্গে যুক্ত নন বলেই দাবি। প্রথম থেকে তাঁর বাবা তৃণমূল করত, বলছেন মেয়ে। আইন আদালত থাকা সত্বেও কেন তার বাবাকে এইভাবে পিটিয়ে মারা হয়েছে? সেই প্রশ্ন তুলছে পরিবার।
Source: Sangbad Pratidin