অর্ণব আইচ: পার্ক সার্কাসের পর পার্ক স্ট্রিট (Park Street)। ট্রাফিক সার্জেন্টের পর সিআইএসএফ জওয়ান। একইভাবে এলোপাথারি গুলি। পার্ক সার্কাসে মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারিয়েছিলেন এক তরুণী। আর ভারতীয় জাদুঘরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ জওয়ানদের বারাকে ঘটা ব্রাশ ফায়ারে প্রাণ গেল এক এএসআইয়ের। যার এবছরই অবসর নেওয়ার কথা ছিল। কিন্ত কেন এমন ঘটনা ঘটল, কেন চলল গুলি, ব্রাশ ফায়ারের মোটিভ ঘিরে উঠেছে নানা প্রশ্ন।
একাধিক সূত্র থেকে উঠে আসছে নানা তথ্য। কেউ কেউ বলছেন, এদিন বিকেলে জাদুঘরের মূল ফটক বন্ধ করা নিয়ে হেড কনস্টেবল অক্ষয়কুমার মিশ্র এবং এএসআই রঞ্জিত সরঙ্গির মধ্যে বচসা হয়। তারপরই এই ঘটনা ঘটে। জাদুঘর সূত্রে খবর, রঞ্জিত গাড়ি নিয়ে বের হওয়ার সময় তাঁকে লক্ষ্য করে এলোপাথারি গুলি ছোঁড়ে অক্ষয়। এরপর জাদুঘর থেকে পালিয়ে বিধায়কদের হস্টেলের পাশে থাকা সিআইএসএফ জওয়ানদের বারাকে আশ্রয় নেয় সে। জানা যায়, আশুতোষ শতবার্ষিকী হলের পাশে একটি ঘরে লুকিয়ে পড়েছিল অক্ষয়। আবার কেউ কেউ বলছেন, লিফট নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল তাঁদের মধ্যে। কিন্তু স্রেফ এই সামান্য বচসার জেরে এমন ঘটনা ঘটাল ওই বন্দুকবাজ জওয়ান? প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
[আরও পড়ুন: দু’ঘণ্টার তাণ্ডব শেষ, পার্ক স্ট্রিটের CISF ব্যারাকে আত্মসমর্পণ বন্দুকবাজ জওয়ান]
তবে টার্গেট কিলিংয়ের বিষয়টা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। অক্ষয় এবং রঞ্জিন দুজনই ওড়িশার ঢেনকানলের বাসিন্দা। দুজনের বাড়িই প্রায় পাশাপাশি। সূত্রের খবর, সম্প্রতি বন্দুকবাজ জওয়ানের পিতৃবিয়োগ হয়েছে। কিন্তু ছুটি পাননি। বাতিল হয়েছিল ছুটি। অথচ রঞ্জিত ছুটি পেয়েছিল। সেই ব্যক্তিগত রাগ থেকেই এই ঘটনা ঘটানো হয়ছে কিনা তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। কলকাতা পুলিশের তরফে অবশ্য ব্রাস ফায়ারের মোটিভ নিয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি। কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল জানিয়েছেন, “তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ করলেই তথ্য মিলবে।”
প্রশ্ন উঠছে আততায়ীর মানসিক ভারসাম্য নিয়েও। কলকাতা পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর নির্লিপ্তভাবে গাড়িতে উঠে বেরিয়ে গিয়েছে সে। আবার আত্মসমর্পণের আগে কলকাতা পুলিশকে নিরস্ত্রভাবে ভিতরে ঢোকার শর্ত চাপিয়েছিল। তার এধরনের কীর্তি দেখে ওয়াকিবহাল মহল বলছে, মানসিক ভারসাম্যহীন নয়। বরং ঠান্ডা মাথার কালপ্রিট ছিল সিআইএসএফের হেড কনস্টেবল অক্ষয়কুমার মিশ্র।
[আরও পড়ুন: অভিজাত আবাসন থেকে আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারের ২ নম্বর ঘর, কেমন আছেন অর্পিতা?]
Source: Sangbad Pratidin