নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: সর্ষের মধ্যে ভুত! লাগাতার পেট্রল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির নেপথ্যের কারণ কি শুধুই আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধি? নাকি সমস্যা আরও গভীরে? কেন্দ্রের দেওয়া তথ্য বলছে, ভারতের পেট্রোলিয়াম রিজার্ভ নেমে এসেছে মাত্র ৭৪ দিনে। বৃহস্পতিবার সংসদে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের (Sougata Roy) এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে এই তথ্য দিয়েছে খোদ পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে কোনও উন্নয়নশীল দেশের পক্ষে এত কম পেট্রোলিয়াম রিজার্ভ রীতিমতো বিপজ্জনক।
সৌগত রায় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকের (Petroleum Ministry) কাছে জানতে চেয়েছিলেন এই মুহূর্তে দেশে মজুত তেলের পরিমাণ ঠিক কতটা? কোনও জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হলে সেই পরিমাণ তেল দিয়ে কতদিন কাজ চালানো সম্ভব? এই প্রশ্নের জবাবে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক জানিয়েছে, এই মুহূর্তে দেশে ৫.৩৩ মিলিয়ন মেট্রিক টন অশোধিত তেল মজুত আছে। যা দিয়ে ৯.৫ দিন দেশের চাহিদা মেটানো সম্ভব। সেই সঙ্গে বিভিন্ন পেট্রোলিয়াম সংস্থাগুলির কাছে যা তেল মজুত আছে তাতে আরও ৬৪.৫ দিনের কাজ চলতে পারে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে অশোধিত তেল এবং পেট্রল-ডিজেল মিলিয়ে দেশের মোট ৭৪ দিনের তেল রয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘আবার আসবেন’, রাজ্যসভার ৭২ সাংসদের বিদায় সংবর্ধনায় আবেগপ্রবণ মোদি]
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের পেট্রোলিয়াম স্টক এতটা কমে যাওয়া রীতিমতো উদ্বেগের। বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন (Russia-Ukraine) যুদ্ধের আবহে গোটা বিশ্ব যখন অনিশ্চয়তার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তখন এই পরিসংখ্যান আরও উদ্বেগের। যে কোনও দেশেই অন্তত তিন মাস অর্থাৎ ৯০ দিনের পেট্রোলিয়াম রিজার্ভ থাকা উচিত। ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশে এই রিজার্ভের পরিমাণ আরও বেশি থাকার কথা বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। তাছাড়া ভারতে সাধারণত ১০০ দিনের পেট্রপণ্যের স্টক থাকেই। কী করে এত কমে গেল? জবাব নেই কেন্দ্রের কাছে।
[আরও পড়ুন: ‘যাঁরা মদ খান তাঁরা ভারতীয় নন, মহাপাপী’, মদ্যপায়ীদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠলেন নীতীশ কুমার]
এদিকে, পেট্রোলিয়াম রিজার্ভ নিয়ে সংকটের মধ্যেই লাগাতার দেশে বেড়ে চলেছে পেট্রোপণ্যের দাম। অথচ কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই সরকারের। কেন্দ্রের মোদি (Narendra Modi) সরকারের ওই ‘উদাসীনতা’ নিয়ে এদিন সংসদে সরব হয় তৃণমূল কংগ্রেস। লোকসভায় তৃণমূল সাংসদরা জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে স্পিকার এবং পেট্রোলিয়াম মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে কাজের কাজ না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ওয়াকআউট করেন তৃণমূল সাংসদরা।
Source: Sangbad Pratidin