অর্ণব আইচ: মুদ্রা বিনিময় (Note Exchange) কেন্দ্রের মাধ্যমে চোরাই সোনা বিক্রির কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার! মাত্র একটি কাগজের চিরকুট ও কোড লেখা টাকা বদলে যাচ্ছে ডলারে। এভাবে মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্র থেকে বেআইনিভাবে পাওয়া বিপুল পরিমাণ ডলার (Dollar) হাওয়ালার মাধ্যমে বিদেশে সোনা পাচারকারী চক্রের মাথাদের হাতে পৌঁছে যাচ্ছে সহজে। আবার কখনও ওই বিপুল ডলার ক্রিপ্টোকারেন্সিতেও (Cryptocurrency) পরিবর্তন করা হয়। সম্প্রতি এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া দুই বিদেশি মুদ্রা বিনিময় কারবারিকে জেরা করে এই ব্যাপারে বেশ কিছু তথ্য উঠে এসেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ডিরেক্টরেট অফ রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্সের (DRI) আধিকারিকদের হাতে।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, সোনা পাচারকারীদের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকার অভিযোগে সম্প্রতি অনুপ খান ও অভিজিৎ তরফদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। মধ্য কলকাতার নিউ মার্কেটে (New Market) রয়েছে তাদের অফিস। সেখান থেকেই মুদ্রা বিনিময় করে তারা। এর আগে সোনা পাচার চক্রের কয়েকজন মাথাকে গোয়েন্দারা গ্রেপ্তার করেছিলেন। এই ঘটনায় প্রথম দফায় ২ কোটি ২৩ লক্ষ টাকার চোরাই সোনা উদ্ধার হয়। পরের দফায় উদ্ধার হয় আরও টাকা ও সোনা। এই ঘটনায় শংকর কর্মকার নামে এক সোনা পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করেন গোয়েন্দারা। তাকে টানা জেরার পর গ্রেপ্তার করা হয় বিপুল মজুমদার নামে এক সোনা পাচারকারীকেও।
[আরও পড়ুন: ডাইনে কান্তি, বামে বিকাশ, মঞ্চের মধ্যমণি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়]
জেরার মুখে ধৃতরা গোয়েন্দাদের জানায় যে, উদ্ধার হওয়া বিপুল পরিমাণ সোনা কলকাতায় পাচার হয়ে আসে বিদেশ থেকেই। তদন্তে গোয়েন্দারা জেনেছেন, দুবাই (Dubai) বা মধ্য প্রাচ্যের কয়েকটি জায়গাই হচ্ছে সোনা পাচারের (Gold Smuggling) আঁতুড়ঘর। দুবাই থেকে সিঙ্গাপুর বা হংকং হয়ে চোরাই সোনা পৌঁছে যায় নেপাল, বাংলাদেশ ও মায়ানমারে। সেখান থেকেই বিভিন্ন রুটে সোনা এসে পৌঁছয় কলকাতায়। কিন্তু মধ্য প্রাচ্যে থাকা সোনা পাচার চক্রের মাথাদের মূল্য মেটাতে হয় ডলারে। সেই কারণে সোনা পাচারকারীরা সরাসারি যোগাযোগ রাখে মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্রের সঙ্গে, যারা বেআইনিভাবে একসঙ্গে কোটি কোটি টাকা ডলারে পরিবর্তন করে।
[আরও পড়ুন: তিন রাজ্যে ল্যান্ড স্লাইড ভিকট্রি বিজেপির, নেপথ্যে এই ৫ কারণ?]
কলকাতার সোনা পাচার চক্রের মূল এজেন্টের হাতে বিক্রির টাকা এসে পৌঁছনোর পর একটি চিরকুট দিয়ে লোক মারফৎ তা পাঠিয়ে দেওয়া হয় মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্রে। ওই চিরকুট দেখে ও কোড নম্বর শুনেই টাকার বদলে ডলার তুলে দেওয়া হয় ওই ব্যক্তির হাতে। সোনা পাচারকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে কলকাতার কয়েকজন হাওয়ালা অপারেটরের। কাপড়ের দোকান বা নিত্যপ্রয়োজনীয় বস্তু রপ্তানির আড়ালে চলা হাওয়ালার গদির মাধ্যমে ওই বিপুল ডলার পাচার হয়ে যায় মধ্যপ্রাচ্যে। ধৃত দুই মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্রের ব্যবসায়ীর কাছ থেকে এই ব্যাপারে আরও তথ্য জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।
Source: Sangbad Pratidin