অর্ণব আইচ: মাছে ভাতে বাঙালি। বাঙালি মাছ খাবেই। গ্রেপ্তার হওয়া বন্দিরাই বা বাদ যায় কেন? কলকাতা পুলিশের লক আপে থাকা বন্দিরাও যাতে মাছ-ভাত খায়, এবার সেই ব্যবস্থা করল লালবাজার।
পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, লালবাজারের সেন্ট্রাল লক আপে এই ব্যবস্থা চালু হলে প্রায় এক দশক পর পাতে মাছ, ভাত পাবে বিভিন্ন মামলায় ধৃত অভিযুক্তরা। তার আগে সরকারি নিয়ম মেনে মাছ দেওয়া হত সেন্ট্রাল লক আপের বন্দিদের পাতে। কিন্তু অন্তরায় মাছের কাঁটা। পুলিশকর্তাদের মতে, একটু বড় মাছের কাঁটাও হয়ে উঠতে পারে অস্ত্র। কেউ মাছের কাঁটা জমিয়ে রেখে, তা শুকিয়ে অন্য বন্দির উপর হামলা চালাতে পারে। অন্য বন্দির চোখও নষ্ট করার চেষ্টা করতে পারে। তাই মাছের বদলে ডিম দেওয়াকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়। তা দেখাদেখি অনেক থানাও লক আপে থাকা বন্দিদের মাছ দেওয়া বন্ধ করে দেয়। এবার লক আপে বন্দিদের জন্য খাবারের বরাদ্দের টাকা অনেকটাই বাড়িয়েছে কলকাতা পুলিশ। এর পর বন্দিদের মেনুতে ফের মাছ ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন লালবাজারের কর্তারা।
[আরও পড়ুন: উষ্ণ ডিসেম্বর! ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজাউম’ কাঁটায় একধাক্কায় ৫ ডিগ্রি বাড়ল বঙ্গের তাপমাত্রা]
এতদিন বিভিন্ন থানা, এসটিএফ ও লালবাজারের সেন্ট্রাল লক আপে থাকা একেকজন বন্দির জন্য বরাদ্দ ছিল ৪৫ টাকা। এবার সেই টাকা বাড়িয়ে ৭৩ টাকা ৫০ পয়সা করা হয়েছে। লালবাজারের এক কর্তার মতে, ওই কম টাকার মধ্যে প্রতিনিয়ত মাছ দেওয়া খুব সহজ ব্যাপার নয়। তার উপর কাঁটার সমস্যা ছিলই। কিন্তু রাজ্য সরকার বহু আগেই মাছ বরাদ্দ করেছিল বন্দিদের জন্য। তাই মাছের ব্যাপারটা খুব নতুন, এমন নয়। তার উপর প্রত্যেকটি জেলের বন্দিদেরই সপ্তাহে দু’দিন মাছ দেওয়া হয়।
লালবাজারের নির্দেশ অনুযায়ী, বন্দিদের মধ্যাহ্নভোজনের মেনুতে থাকবে ভাত, রুটি, ডাল, সবজি, মাছের ঝোল। যে বন্দি মাছ খাবে না, তার বদলে তাকে দেওয়া হবে ফল বা সুষম খাদ্য। একই মেনু নৈশভোজনেও। দিনে ১৪.৫ গ্রাম মাছ বরাদ্দ করা হয়েছে। তাই লালবাজারের নির্দেশ, একদিন অন্তর মোট ২৯ গ্রাম মাছ দেওয়া হবে বন্দিদের। সেই মাছ রুই, কাতলা বা মৃগেল হতে হবে। পুলিশকর্তাদের মতে, এই মাপের মাছ খুব বড় হবে না। তাই তার কাঁটাও ছোট হবে। ফলে ছোট মাপের কাঁটা দিয়ে হামলা চালানোও সহজ হবে না। আবার দেখা গিয়েছে, অনেকেরই ডিমে অ্যালার্জি রয়েছে ও অনেক সময় ডিম খেলে হজমেরও সমস্যা হয়। তাই মাছের মতো প্রোটিনযুক্ত ও সহজপাচ্য খাবারকেই পুলিশ গুরুত্ব দিচ্ছে। এ ছাড়াও প্রাতরাশে বন্দিদের চা ও রুটি দিতে হবে। যে বন্দি চা খায় না, তাকে মিষ্টি বা দই দিতে বলা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: উত্তরকাশী টানেল বিপর্যয়: ঝুঁকি থাকলেও কাজে ফিরতে হবে! বলছেন ‘মৃত্যুঞ্জয়ী’ সৌভিক-জয়দেবরা]
Source: Sangbad Pratidin