সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আজ, শনিবার রাজস্থান বিধানসভা নির্বাচন। কড়া নিরাপত্তা বলয়ে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ। গেহলট বনাম পাইলট শিবিরের দ্বন্দ্বে জেরবার কংগ্রেস কী ধরাশায়ী হবে? প্রথা মেনে কী মরুরাজ্য এবার বেছে নেবে বিজেপিকে? এই সমস্ত উত্তর মিলবে ৩ ডিসেম্বর। এদিকে, জনতার কাছে দলে দলে এগিয়ে এসে ভোটদান করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
राजस्थान विधानसभा चुनाव के लिए आज वोट डाले जाएंगे। सभी मतदाताओं से मेरा निवेदन है कि वे अधिक से अधिक संख्या में अपने मताधिकार का प्रयोग कर वोटिंग का नया रिकॉर्ड बनाएं। इस अवसर पर पहली बार वोट देने जा रहे राज्य के सभी युवा साथियों को मेरी ढेरों शुभकामनाएं।
— Narendra Modi (@narendramodi) November 25, 2023
শনিবার ২০০ আসনের মধ্যে ১৯৯টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এক দফাতেই। ম্যাজিক ফিগার ১০১। ৩ ডিসেম্বর হবে ফল প্রকাশ। ওইদিন একই সঙ্গে মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, মিজোরাম ও তেলেঙ্গানার বিধানসভা নির্বাচনেরও ফল ঘোষণা হবে। করণপুর আসনের কংগ্রেস প্রার্থী গুরমিত সিং কুনুরের মৃত্যুর কারণে এই আসনে ভোটগ্রহণ স্থগিত হয়েছে। বলে রাখা ভাল, ১৯৮৫ সালের বিধানসভা ভোটে রাজস্থানে ক্ষমতা ধরে রাখতে পেরেছিল কংগ্রেস। তারপর থেকে প্রতিটি বিধানসভা ভোটেই নিয়ম করে সরকার বদলেছে মরুরাজ্য। সেই ‘রীতি’ মেনেই কি এবার বিজেপির পালা আসবে।
[আরও পড়ুন: মোদি-নেতানিয়াহু মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ! প্রধানমন্ত্রীকে জোরালো তোপ কংগ্রেসের]
এদিন ভোটগ্রহণের মধ্য দিয়ে ভাগ্য নির্ধারণ হবে মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট, শচীন পাইলট, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া, প্রাক্তন অলিম্পিয়ান ও সাংসদ রাজ্যবর্ধন সিং রাঠোরের মতো হেভিওয়েটদের। মরুরাজ্য দখলে ভোট ঘোষণার পর থেকেই প্রচারে ঝাঁপান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ, জে পি নাড্ডা ও রাজনাথ সিংরা। অন্যদিকে, হাত শিবিরের দুই নেতা মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট ও শচীন পাইলটের দ্বৈরথ সকলেরই জানা। তাই ক্ষমতা ধরে রাখতে গোষ্ঠীকোন্দল মিটিয়ে দুই শিবিরকে একমঞ্চে এনে প্রচারে ঝড় তোলেন রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়গেরা।
এদিকে, ভোটগ্রণের ঠিক আগের দিন বিজেপির বিরুদ্ধে বোমা ফাটান কংগ্রেস নেত্রী সুপ্রিয়া শ্রীনাতে। তাঁর অভিযোগ, বিজেপির শীর্ষনেতা তাঁকে জানান, বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারত জিতলে তা প্রচারে নিয়ে আসার পরিকল্পনা ছিল। হোর্ডিংয়ে ইন্ডিয়া টিমের সদস্যদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ছবি দিয়ে গোটা রাজ্য মুড়ে দেওয়া হত। সেই হোর্ডিংয়ের ছবিও বিজেপি নেতা মোবাইল ফোনে তাঁকে দেখান বলে দাবি করেন এই কংগ্রেসনেত্রী।
পাঁচ রাজ্যের মধ্যে রাজস্থানের ভোটের দিকেই সারা দেশের রাজনৈতিক মহলের বিশেষ নজর রয়েছে। এই রাজ্যে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর সরকার বদল হওয়ার রীতি রয়েছে। তবে অশোক গেহলটের নেতৃত্বকে সামনে রেখে মরুরাজ্যে আরও পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতায় টিকে যেতে মরিয়া কংগ্রেস। অন্যদিকে, গেহলট সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়ায় ভর করে বিজেপিও ক্ষমতা দখলের দৌড়ে কোনও চেষ্টার ত্রুতি রাখছে না। তবে দুই শিবিরকেই বড় চিন্তায় রেখেছে দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্ব। ভোটের আগমুহূর্ত পর্যন্ত দুই শিবিরেই নেতাদের মধ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ প্রকাশ্যে এসে পড়ছে।
রাজস্থান ভোটে এবার দ্বিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। একদিকে কংগ্রেস, বিপরীতে বিজেপি। তবে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় এই যে, উভয় দলই ছোট দলগুলির প্রার্থীদের নজরে রেখেছে। হয় তাদের বড় দলে যোগ দিতে চাপ দেওয়া হচ্ছে, অথবা যে কোনও বড় দলের প্রার্থীকে সমর্থন জানিয়ে প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। যেমন, প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর পাপ্পু কুরেশি এবং উমর দারাজ কংগ্রেস ছেড়ে আম আদমি পার্টি (আপ)-তে যোগ দিয়ে জয়পুরের হাওয়া মহল এবং আদর্শ নগর কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন। তবে সম্প্রদায়ের নেতাদের বারবার চাপ এবং মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের তরফে কিছু ‘প্রতিশ্রুতি’-তে ভোটের সপ্তাহখানেক আগে ফের তাঁরা কংগ্রেসে ফিরে এসেছেন। অন্যদিকে, আদর্শ নগরে বহুজন সমাজ পার্টির (বসপা) প্রার্থী হাসান রাজাও কংগ্রেসের প্রার্থীকে সমর্থন জানিয়ে নিজের প্রার্থীপদ প্রত্যহার করেছেন। ফলে এই সংখ্যালঘু ভোট নিশ্চিত করে ফেলেছেন দেশের প্রাচীনতম দলের প্রার্থী।
[আরও পড়ুন: ‘আমরা ক্রিকেট নিয়ে মাতি আর ওঁরা…’, রাজৌরির শহিদ জওয়ানদের শ্রদ্ধা আনন্দ মাহিন্দ্রার]
নিজেদের অবস্থান মজবুত করতে পিছিয়ে নেই বিজেপিও। বিদ্যাধর নগরে স্থানীয় পরিবর্তন পার্টি অফ ইন্ডিয়ার প্রার্থী রাজপাল শেখাওয়াত ভোটের মুখে লড়াইয়ের ময়দান থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। সূত্রের খবর, সেখানে বিজেপির প্রার্থী ‘রানি’ দিয়া কুমারীকে সমর্থন জানিয়েছেন তিনি। প্রার্থীপদ প্রত্যাহারের জন্য গেরুয়া শিবিরের তরফে শেখাওয়াতের উপর চাপ সৃষ্টি করা হয়। জয়পুরের হাওয়া মহল আসনে বসপা-র তরুণ পরাশর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য তার প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করেছেন। সেখানে বালমুকুন্দাচার্য, কংগ্রেসের আর আর তিওয়ারির বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পাশাপাশি, বসপা-র সিভিল লাইনসের প্রার্থী অরুণ চতুর্বেদী কংগ্রেসের বর্তমান ক্যাবিনেট মন্ত্রী প্রতাপ সিং খাচারিয়াওয়াসকে সমর্থন জানিয়ে নিজের প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করেছেন। নিম কা থানার উদয়পুরওয়াতি কেন্দ্রে বসপা প্রার্থী সন্দীপ সাইনি কংগ্রেসের ভগবান রাম সাইনিকে সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আলওয়ারের তিজারায় বসপার হেমকরণ বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য তাঁর প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করেছেন।
Source: Sangbad Pratidin