সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিধানসভার (West Bengal Assembly) হাজিরা খাতায় বিধায়কদের সইয়ের নিয়ম নতুন কিছু নয়। তবে শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া শীতকালীন অধিবেশনে হাজিরা নিয়ে এবার বেশিই কড়া তৃণমূল শিবির। খোদ মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রীর নির্দেশ, বিধানসভায় প্রবেশ ও বেরনোর সময় বিধায়কদের সই করা বাধ্যতামূলক। দলকে না জানিয়ে কারও অনুপস্থিতি গ্রাহ্য হবে না। এমনই বিবিধ কড়া নিয়মের বেড়াজালে বিধানসভা অধিবেশন শুরু হয়েছে শুক্রবার থেকে। পরিষদীয় মন্ত্রীর ঘরে রাখা হাজিরা খাতায় সকলে সই করে ভিতরে ঢুকেছেন। আর তা নিয়ে প্রকাশ্যেই বিরক্তি প্রকাশ করলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। তাঁকে বলতে শোনা গেল, ”আমরা কি স্কুলে পড়ি যে নিয়ম করে হাজিরা খাতায় সই করতে হবে? দলের নির্দেশ, তাই সই করলাম।” এর পর তিনি আরও বলেন, ”সকলের দায়িত্ব আছে। নিজের দায়িত্ব পালন করুক সবাই।”
আসলে প্রত্যেক অধিবেশনে দলের নির্দেশ সত্ত্বেও অনেক সময়েই গরহাজির থাকেন শাসকদলের বিধায়কদের একাংশ। কখনও আবার বিধানসভায় এলেও অধিবেশন চলাকালীন বেরিয়ে যান, আলোচনায় সেভাবে অংশ নেন না। গত অধিবেশন বা তার আগের একটি অধিবেশনে জরুরি প্রস্তাব বা বিল পাশের জন্য ভোটাভুটিতে তৃণমূলের বিধায়কের তুলনায় হাজিরা সংখ্যা আশানুরূপ ছিল না। ভোট অনায়াসে জিতলেও বিধায়কদের অনুপস্থিতির বিষয়টি ভালোভাবে নেননি দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তার পর থেকেই হাজিরা নিয়ে কড়াকড়ি শুরু হয়। দায়িত্ব দেওয়া হয় পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে। গড়ে দেওয়া হয় শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি। তার পরও এবার থেকে হাজিরার বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী নিজেই দেখবেন বলে স্থির করেছেন।
[আরও পড়ুন: সিঙ্গল বেঞ্চের পর ডিভিশন বেঞ্চেও ধাক্কা, ধর্মতলায় শাহের সভার অনুমতি দিল হাই কোর্ট]
বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোরে দলের মেগা সম্মেলনে তাঁর নির্দেশ ছিল, এবার থেকে বিধায়কদের ঢোকা এবং বেরনোর সময় হাজিরা খাতায় সই করতেই হবে। বিশেষ কারণ থাকলেও দলকে না জানিয়ে অনুপস্থিত হওয়া যাবে না।
[আরও পড়ুন: রাজারহাটের ধাঁচে উত্তরবঙ্গেও হবে আইটি হাব, বিশেষ দায়িত্বে রাজীব কুমার]
এসব নিয়ম মেনেই শুক্রবার অধিবেশন শুরুর সময় পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের (Sovandeb Chatterjee) ঘরে রাখা হাজিরা খাতায় সই করতে হয়েছে সকলকে। আর তাতেই কিছুটা বিরক্ত ফিরহাদ হাকিম। তাঁর বক্তব্য, ‘‘নিজেদের দায়িত্ব রয়েছে। আমরা তো স্কুলের বাচ্চা নই যে সই করতে হবে।’’ আসলে যে বিধায়করা বিধানসভায় নিয়মিত আসেন না, অনেক সময় তাঁদের দায়ও নিতে হয় বাকি বিধায়কদের। কিন্তু যাঁরা নিয়মিত বিধানসভার দায়িত্ব পালন করেন, তাঁদের জন্যও কেন সইয়ের বাঁধাধরা নিয়ম? ফিরহাদের আজকের প্রতিক্রিয়া সম্ভবত তারই বহিপ্রকাশ।
Source: Sangbad Pratidin