সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শিক্ষক নিয়োগ থেকে রেশন কিংবা গরু পাচার মামলায় সিবিআই-ইডির স্ক্যানারে রাজ্যের একাধিক নেতা-মন্ত্রী। জেলবন্দি অনুব্রত, পার্থ, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের পাশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরা ‘চোর’ বলে বিশ্বাস করেন না বলেই আত্মবিশ্বাসের সুর তৃণমূল সুপ্রিমোর গলায়। নেতা-মন্ত্রীদের গ্রেপ্তারির পালটা হিসাবে প্রত্যাঘাতের হুঁশিয়ারিও দেন মমতা।
শুক্রবার নেতাজি ইন্ডোরের মেগা সমাবেশের মঞ্চ থেকেও গরু পাচারের দায় সম্পূর্ণ কেন্দ্রের বলেই দাবি করেন মমতা। তিনি বলেন, “গরু কাদের আন্ডারে? বিএসএফ। কাদের অর্গানাইজেশন? কেন্দ্র। গরু পাহারা দেয় কারা? সীমান্ত পাহারা দেয় কারা? বিএসএফ। গরু আসে বিহার, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান থেকে। গাড়ি পাসের সময় তোমরা টাকা খাও না? ল্যাভেঞ্চুস খাও।” কেন্দ্রকে আক্রমণ করে মমতা আরও বলেন, “কয়লা ধুলেও যাবে না ময়লা। এগুলো কার অধীনে? কেন্দ্র। এগুলো বারবার বলুন। মিথ্যা বারবার বলে সত্যি করা হয়। আমরা সবাই চোর? দুর্নীতি দেখাচ্ছে। আর সেখানে শিখিয়ে টাকা দিয়ে বলা হচ্ছে, বলো তৃণমূল চোর। না বললেই রেড করবে।”
[আরও পড়ুন: নগরোন্নয়ন দপ্তরে চাকরি দেওয়ার নামে জালিয়াতি! ৩৭ লক্ষ টাকা হাতিয়ে গ্রেপ্তার ২]
গ্রেপ্তার হওয়া চার নেতা-মন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে মমতা বলেন, “আজ কেষ্ট জেলে, পার্থ জেলে, মানিক জেলে, বালু জেলে। আর হাসছেন। ভাবছেন এটাই চলবে? আগামী দিন যখন চেয়ারে থাকবেন না, তখন কোথায় থাকবেন? জেলে না সেলে? আজ সিপিএম ও বিজেপি কোলবালিশ হয়ে ঘুরছে। এদের একজন বলছে অমুকের বাড়ি যাবে। চলে গেল। লুট করে এল। সিজার লিস্ট দিল না। আন্ডার গান চমকে ধমকে রেখে দিল। এই সরকার যত তাড়াতাড়ি যায় তত ভালো।” প্রত্যাঘাতের হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা আরও বলেন, “আমাদের চার বিধায়ক গ্রেপ্তার হয়েছেন। ওরা যদি চারজনকে জেলে রাখে, আমি পুরনো কেস রিওপেন করে ৮ জনকে জেলে ভরে দেব।”
উল্লেখ্য, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তার পরই গরু পাচার মামলায় শুরু হয় ধরপাকড়। বীরভূমের নিচুপট্টির বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার হন অনুব্রত মণ্ডল। দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতার আপাতত ঠিকানা তিহাড় জেলই। একে একে গ্রেপ্তার হয়েছেন মানিক ভট্টাচার্য-সহ একাধিক ছোটবড় নেতা। সম্প্রতি রেশন দুর্নীতি মামলায় ইডির জালে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। গ্রেপ্তারির পর কারও বিরুদ্ধে তেমন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি তৃণমূল। তবে দলের সমস্ত পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। দলের সঙ্গে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর দূরত্ব তৈরি হয়েছে বলেই ওয়াকিবহাল মহলে জল্পনাও দানা বাঁধে। যদিও দল তাঁর পাশে আছে বলে সবসময় দাবি করেছেন জেলবন্দি পার্থ। এই প্রেক্ষাপটে বহুদিন পর মমতার গলায় পার্থর নাম যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য, বাণিজ্য সম্মেলনে কোন খাতে কী পেল বাংলা?]
Source: Sangbad Pratidin