সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তাঁরা যেন ‘দ্য ৩০০’। থার্মোপিলাইয়ের যুদ্ধে যেভাবে পারস্য সম্রাট জেরেক্সাসের বিরাট সেনাকে রুখে দিয়েছিলেন স্পার্টার রাজা লিওনাইডাস, কার্যত একই কায়দায় মারিওপোলে বিরাট রুশ বাহিনীক আটকে দিয়েছিলেন তাঁরা। তবে শেষমেশ শত্রুদের হাতে বন্দি হন ওই যোদ্ধারা। এবার তুরস্ক থেকে মারিওপোলের সেই পাঁচ কমান্ডারকে সঙ্গে নিয়ে দেশে ফিরলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
উল্লেখ্য, পাঁচশো দিন পেরিয়ে গেলেও চলছে মহাসংগ্রাম। ইউক্রেন ও রাশিয়ার সংঘাত আলোড়ন তৈরি করেছে গোটা বিশ্বে। বারবার শান্তি ফেরানোর আরজি জানালেও তড়াই থামাতে ব্যর্থ হয়েছে আন্তর্জাতিক মঞ্চ। এহেন পরিস্থিতিতে পাঁচ যুদ্ধবন্দি ইউক্রেনীয় সেনা কমান্ডার- ডেনিস প্রোকোপেনকো, শ্বেতোস্লাভ পালামার, সেরি ভলিনস্কি, ওলে কোমেনকো, ডেনিস শ্লেহাকে সঙ্গে নিয়ে শনিবার দেশে ফেরেন জেলেনস্কি। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লিখেছেন, “অবশেষে পরিবারের সকলের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন ওঁরা।” পূর্ব ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে লড়ছেন কমান্ডার ম্যাকসিম জোরিন। তিনি বলেন, “অবশেষে! একটা দারুণ ভাল খবর। ভাইদের শুভেচ্ছা।”
[আরও পড়ুন: রং-তুলিতে ইতিহাসের ছবি, টাইমস স্কোয়্যারে ‘বং কানেকশন’, ভেসে উঠল বঙ্গ কন্যার মুখ]
গত বছর দীর্ঘ লড়াইয়ের পর গোটা মারিওপোল শহরই দখল করে ফেলে রুশ বাহিনী। তবে বন্দর শহরটির আজভস্টাল লৌহ ও ইস্পাত কেন্দ্রে ঘাঁটি গেড়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল ইউক্রেনীয় সেনার বিশেষ বাহিনী আজভ রেজিমেন্ট ও ৩৬ মেরিন ব্রিগেড। কিন্তু আঘাত, পানীয় জল, খাবার ও গোলাবারুদের অভাবে শেষরক্ষা করা যায়নি। বন্দি করা হয় কমান্ডারদের। সেপ্টেম্বর মাসে তুরস্কের মধ্যস্থতায় কিছু ইউক্রেনীয় সেনাকে মুক্তি দেয় রাশিয়া। কিন্তু সে সময়ে আঙ্কারার সঙ্গে চুক্তি করে মস্কো, যুদ্ধ শেষ না হওয়া ইস্তক তুরস্কে থাকতে হবে ওই কমান্ডারদের। কিন্তু গত শুক্রবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তায়েপ এরদোগানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জেলেনস্কি। তারপরই ওই পাঁচ কমান্ডারকে মুক্তি দেয় আঙ্কারা।
এদিকে, এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ রাশিয়া। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, আঙ্কারার পক্ষ থেকে তাদের কথা দেওয়া হয়েছিল, ওই ইউক্রেনীয় যোদ্ধাদের তুরস্কেই রাখা হবে। পেসকোভের অভিযোগ, কথা তো রাখা হয়ইনি, মস্কোকে এ বিষয়ে কিছু জানানো পর্যন্ত হয়নি। প্রসঙ্গত, ভৌগোলিক ও কৌশলগত দিক থেকে রাশিয়ার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পূর্ব ইউক্রেনের বন্দর শহর মারিওপোল। কারণ, রাশিয়া অধিকৃত ক্রাইমিয়ার সঙ্গে রুশপন্থীদের কব্জায় থাকা ডোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক এলাকাকে (দোনবাস অঞ্চল) যুক্ত করতে চায় মস্কো। এই যোগসাধনের জন্য প্রয়োজন বন্দর শহর মারিওপোলে দখল কায়েম রাখা।
[আরও পড়ুন: আকাশসীমা ভেঙে ঢুকে পড়ল মার্কিন বিমান, ‘গুলি করে নামাব’, হুঁশিয়ারি উত্তর কোরিয়ার]
Source: Sangbad Pratidin