সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কর্ণাটক বিবাদে ইতি। মুখ্যমন্ত্রী পদে সিদ্দারামাইয়া, উপমুখ্যমন্ত্রী পদে শিবকুমার। বহু আলোচনার পর এই সিস্টেমে রাজি করানো গিয়েছে দুই শিবিরকেই। কংগ্রেস বলছে মধুরেণ সমাপয়েত…। সত্যিই কি তাই?
কংগ্রেসের অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেল থেকে একটি ছবি পোস্ট করা হয়েছে। দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের একদিকে ডিকে শিবকুমার, অন্যদিকে সিদ্দারামাইয়া। সঙ্গে লেখা ‘একসঙ্গে শক্তিশালী’। ঠিক একইরকম দুটি ছবি ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পরও কংগ্রেসের অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেল থেকে পোস্ট করা হয়েছিল। সেসময় কংগ্রেস সভাপতি ছিলেন রাহুল গান্ধী। একটি ছবিতে রাহুলের সঙ্গে একদিকে ছিলেন কমল নাথ, অন্যদিকে ছিলেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। আরেকটি ছবিতে রাহুলের সঙ্গে একদিকে ছিলেন শচীন পাইলট, অন্যদিকে ছিলেন অশোক গেহলট। ওই দুই রাজ্যেই কংগ্রেস নেতারা বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’। ঠিক যেমনটা কর্ণাটকের ক্ষেত্রে করা হল।
Stronger together! pic.twitter.com/lKtASQdPdC
— Congress (@INCIndia) May 18, 2023
[আরও পড়ুন: ‘রাহুল নয়, মোদিকে হারাতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ করা হোক প্রিয়াঙ্কাকে’, দাবি বর্ষীয়ান কং নেতার]
কিন্তু শেষপর্যন্ত দেখা গেল ওই ছবি পোস্ট করে একতার বার্তা দেওয়াই সার, বাস্তবে একতার বিন্দুমাত্র দেখা যায়নি ওই দুই রাজ্যের কংগ্রেস নেতাদের মধ্যে। দেড় বছরের মধ্যে কংগ্রেস ছেড়েছেন মধ্যেপ্রদেশের সিন্ধিয়া। মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস সরকার আর নেই। আড়াই বছরের মধ্যে উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে এখন রাস্তায় রাস্তায় বিদ্রোহ করে বেড়াচ্ছেন শচীন পাইলট। রাজস্থানেও কংগ্রেস সরকার একবার কার্যত মৃত্যুমুখ থেকে ফিরে এসেছে। কর্ণাটকেও সেই একই কাণ্ডের পুনরাবৃত্তি ঘটবে না কে বলতে পারে? বস্তুত যেভাবে ডিকে শিবকুমারকে একপ্রকার বাধ্য হয়ে দলের শর্ত মেনে নিতে হল, সেটা আগামী দিনে কন্নড় কংগ্রেসের জন্য মোটেই ভাল খবর নয়।
[আরও পড়ুন: চাকা গড়াল পুরী-হাওড়া বন্দে ভারতের, ভিডিও কনফারেন্সে সবুজ পতাকা দেখালেন মোদি]
কর্ণাটকের ক্ষমতা বিন্যাসটাও অনেকটা রাজস্থানের মতো হয়েছে। সিদ্দারামাইয়া মুখ্যমন্ত্রী। শিবকুমার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এবং উপমুখ্যমন্ত্রী। গোটা ছ’য়েক ভাল মানের মন্ত্রকও দেওয়া হবে ডিকে ঘনিষ্ঠদের। রাজস্থানেও পাইলট এবং গেহলটের একই শর্তে চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু রাজস্থানে সেই সিস্টেম কাজ করেনি। ক্রমে ক্ষমতার অলিন্দ থেকে হারিয়ে গিয়েছেন শচীন পাইলট। সেই একই পরিস্থিতি যে শিবকুমারেরও হতে পারে, সেটা তিনি ভাল করেই জানেন। সম্ভবত সেকারণেই তিনি শেষমুহূর্ত পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবি ছাড়তে চাননি। কিন্তু সোনিয়া গান্ধী হস্তক্ষেপ করায়, একপ্রকার বাধ্য হয়েই তাঁকে মেনে নিতে হয়েছে ক্ষমতা বিন্যাসের শর্ত।
ডিকে বলছিলেন,”কখনও কখনও অনেক শক্ত বরফকেও গলতে হয়। কংগ্রেস কর্ণাটকের মানুষকে কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সেই প্রতিশ্রুতি রাখতে হবে। আমাকে গান্ধী পরিবার এবং সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির কাছে মাথা নোয়াতেই হত।” কিন্তু শিবকুমার ভাই ডিকে সুরেশ কোনও রাখঢাক না করে বলে দিয়েছেন,”আমি পুরোপুরি খুশি নই। দলের স্বার্থে সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে হয়েছে।” এই মেনে নেওয়ার মধ্যে যে অভিমান লুকিয়ে রয়েছে, সেটা বলাই বাহুল্য। এখন কংগ্রেসের আশঙ্কা একটাই, ডিকের অভিমান আগামী দিনে আরও একটা মধ্যপ্রদেশ বা রাজস্থান পরিস্থিতি তৈরি করবে না তো?
Source: Sangbad Pratidin