দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: করোনাকালে মেলেনি চিকিৎসা পরিষেবা। প্রায় বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয় নিজের সন্তানের। যাতে আর কোনও বাবা-মা সন্তান না হারান, সে কারণে অভিনব উদ্যোগ বারাকপুরের দম্পতির। শ্রীরামপুরের শ্রমজীবী হাসপাতালকে চিকিৎসার জন্য ১২টি শয্যা দান করলেন তাঁরা। বাবা-মায়ের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছেন শ্রীরামপুরবাসী।
কমলবাবুর ছেলে বছর চৌত্রিশের কৌশিক বসু বেঙ্গালুরুতে কর্মরত। কৌশিকের স্ত্রী হায়দরাবাদে কর্মরত। করোনাকালে লকডাউনের সময় কোনমতে বারাকপুরের বাড়িতে ফিরে আসেন কৌশিক। কিন্তু তাঁর স্ত্রী হায়দরাবাদে আটকে যান। মে মাসে হঠাৎই প্রচণ্ড পেটের যন্ত্রণা শুরু হয়। ছটফট করতে শুরু করেন কৌশিক।
অসহায় বাবা কমল বসু ও রীতা দেবী ছেলেকে নিয়ে কলকাতায় একের পর এক কর্পোরেট হাসপাতালের দরজায় ঘুরে বেড়ান। কিন্তু হাসপাতালে শয্যা খালি না থাকায় ছেলেকে ভরতি করতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত অবশ্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয় তাঁকে। তবে ততক্ষণে অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছে। সেখানে ভরতি করার কিছুক্ষণ পরই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ছেলে।
[আরও পড়ুন: পাক জঙ্গিকে ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী’ ঘোষণার প্রস্তাব ভারতের, রাষ্ট্রসংঘে বিরোধিতা চিনের]
সন্তানহারা বাবা-মায়ের আক্ষেপ সেদিন যদি ছেলের প্রাথমিক চিকিৎসা হত তবে প্রাণ বাঁচত। তাই আর যাতে কোনও বাবা-মাকে বিনা চিকিৎসায় সন্তান হারাতে না হয় তার জন্য বিশেষ ভাবনা। মঙ্গলবার শ্রীরামপুর শ্রমজীবী হাসপাতালে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ১২টি শয্যা দান করেন এই সন্তানহারা দম্পতি।
শ্রীরামপুর শ্রমজীবী হাসপাতালের সহ-সম্পাদক গৌতম সরকার জানান, তাদের হাসপাতালে গরিব অসহায় মানুষের চিকিৎসা পরিষেবা দেখে অত্যন্ত খুশি। তাই ১২টি শয্যা দান করা হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালের রোগীদের ফলমূল ও মিষ্টি বিতরণের পাশাপাশি চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জলযোগের ব্যবস্থাও করেন ওই দম্পতি।
[আরও পড়ুন: শুভেন্দুর কনভয় দুর্ঘটনা: VIP নিরাপত্তায় রাজ্যের তরফে কী কী আয়োজন? রিপোর্ট চাইল হাই কোর্ট]
Source: Sangbad Pratidin