লগ্নির দুনিয়ায় ক্যাপিটাল প্রোটেকশন কখনওই পুরনো হবে না, চিরকাল আকর্ষণ জমিয়ে রাখবে। সেই কারণেই ক্যাপিটাল প্রোটেকশন ওরিয়েন্টেড স্কিম এখনও জনপ্রিয় এবং এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীদের প্রথম পছন্দের পণ্য। সম্প্রতি এমন দু’টি স্কিম এনেছে বিড়লা মিউচুয়াল ফান্ড। তথ্য সংকলনে টিম সঞ্চয়
মূল টাকা যাতে অটুট থাকে যে জন্য বিনিয়োগকারীরা অনেক কিছু ছাড়তে রাজি হন, কিছুটা রিটার্ন কম হলেও তাঁরা তেমন কিছু মনে করেন না। ‘ক্যাপিটাল প্রোটেকশন’ তাই সব সময় এক জরুরি প্রসঙ্গ, ইনভেস্টমেন্টের দুনিয়ায় এর আকর্ষণ অনেক। তাই ‘Capital Protection Oriented Scheme’ চিরকালই এক শ্রেণির লগ্নিকারির পছন্দের প্রোডাক্ট। তবে একসময় অনেক বেশি জনপ্রিয় হওয়া সত্বেও, এই কয়েক বছর তেমন কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি এই প্রসঙ্গে। বিড়লা মিউচুয়াল এই ধারণায় নতুন শক্তি যোগাচ্ছে এমন স্কিমের প্রস্তাব এনে। দুটি সিরিজের কথা বাজারে শোনা যাচ্ছে, সেবির দরজায় পৌঁছেও গিয়েছেন ফান্ড হাউসটির কর্তৃপক্ষ। ‘Aditya Birla Sun Life Captial Protection Oriented Fund – Series I & II’ হয়তো আগামিদিনে অনুমোদন পাবে, মার্কেটে নিউ ফান্ড অফার (NFO) হিসাবে পাওয়া যাবে।
বিনিয়োগকারীদের কাছে দুটি প্রধান বার্তা পৌঁছবে এই ধরনের স্কিমের মাধ্যমে। প্রথম, তাঁদের মূলধন কমে আসবে না, কারণ তেমনই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন ফান্ড ম্যানেজার। তবে সম্পূর্ণ রকম “প্রোটেকশন” হওয়ার ইঙ্গিত নেই, সেবির নিয়মে একশো শতাংশ সুরক্ষা বা সেই সংক্রান্ত কোনও গ্যারান্টি দেওয়া যায় না। তাই “প্রোটেকশন ওরিয়েন্টেড” – সাধারণ ইনভেস্টররা যেন তফাতটি লক্ষ করেন। দ্বিতীয়, এমন স্কিমে হয়তো রিটার্ন কিছুটা কমই হবে, কারণ সুরক্ষার কারণে সব রকম ঝুঁকি নিতে পারবেন না ফান্ড ম্যানেজার।
[আরও পড়ুন: আর্থিক লক্ষ্যপূরণে পরিশ্রমের বিকল্প নেই, শিখে নিন লগ্নির সহজপাঠ]
কীভাবে সুরক্ষা দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে, ইনভেস্টর জিজ্ঞাসা করতেই পারেন। এই প্রসঙ্গে কয়েকটি জরুরি কথা-
# অনেকটা সুরক্ষা পাওয়া সম্ভব কারণ পোর্টফোলিওর বেশ খানিকটা বিনিয়োগ করা হয় ফিক্সড ইনকাম সিকিউরিটিজে। এইগুলির ম্যাচুরিটি স্কিমটির ম্যাচুরিটির সঙ্গে সম্পর্কিত।
# অল্প ইনভেস্টমেন্ট করা হয় ইকুইটিতে। এর কারণ বোঝা সহজ স্টকে অন্তত কিছু না থাকলে মডারেট রিটার্ন আনতেও মুশকিলে পড়বেন ফান্ড ম্যানেজার।
# ইন্টারেস্ট রেট রিস্ক এবং ক্রেডিট রিস্ক দুই-ই থাকবে, ডেট ফান্ডে যেমন সাধারণত থাকে।
# বিড়লার একটি স্কিমের মেয়াদ ৩৬ মাস। সাধারণভাবে এটির অ্যাসেট অ্যালোকেশন এইভাবে হবে
# অন্য একটি স্কিমে, যেটির মেয়াদ তিন বছরের বেশি, ঋণপত্রে ন্যূনতম ৭০ থাকতে পারে, সর্বোচ্চ ১০০ শতাংশ। সেভাবেই ৩০% বেশি বিনিয়োগ হবে না ইকুইটিতে।
সঞ্চয়-এর বক্তব্য-
ইনভেস্টরদের মনে রাখতে হবে এই ধরনের স্কিমে কখনও ১০০ শতাংশ প্রোটেকশন হয় না। তাই “প্রোটেকশন ওরিয়েন্টেড”-এর মর্মার্থ যেন লগ্নিকারীরা বুঝে নেন। কোনও গ্যারান্টি আদৌ নেই, এই প্রসঙ্গে বলে রাখা উচিত। প্রসঙ্গত, অফার ডকুমেন্ট যদি মন দিয়ে পড়েন, তাহলে স্কিমের মূল উদ্দেশ্য তো পরিষ্কার বুঝবেনই, ‘Capital Protection Oriented’ কীভাবে হবে তাও প্রাঞ্জল হবে। রক্ষণশীল ইনভেস্টররা এই ধরনের প্রোডাক্টে বিনিয়োগ করার কথা ভাবতে পারেন – তাদের মূলধনের উপর প্রবল চাপ পড়বে না, তা আমাদের কাছে পরিষ্কার। অবশ্য ডেট মার্কেটে ভোলাটিলিটি যথেষ্ট। ইদানীং তা কিছুটা বেড়েছেও কারণ সুদ-জনিত পরিবর্তন এনেছে ব্যাংক নিয়ন্ত্রক। তবে এই সন্ধিক্ষণে ক্রেডিট রিস্ক যে নতুনভাবে বাড়ছে তার কোনও খবর বাজারে নেই বলে ধরে নিতে হবে।
[আরও পড়ুন: আর্থিক লক্ষ্যপূরণে পরিশ্রমের বিকল্প নেই, শিখে নিন লগ্নির সহজপাঠ]
Source: Sangbad Pratidin