বাবুল হক, মালদহ: প্রত্যন্ত গ্রামে ছোট্ট বাড়ি। সেখানেই বেড়ে ওঠা। বরাবর মেধাবী হিসাবেই পরিচিত। সকলের মুখে মুখে ফেরে ‘ভাল ছেলে’ আখ্যা। আর সেই ছেলেই কিনা আল কায়দা জঙ্গি সন্দেহে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের জালে ধরা পড়েছে। মানতেই পারছেন না উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুরের মান্ডি থানা এলাকা থেকে জঙ্গি অভিযোগে ধৃত হাসনাত শেখের পরিবার, প্রতিবেশীরা।
মালদহের কালিয়াচকের সুজাপুরের বাসিন্দা হাসনাত শেখ। দরিদ্র পরিবারের সন্তান। নুন আনতে পান্তা ফুরনো সংসারে পড়াশোনাই যেন বিলাসিতা। বাবা-মা পড়াশোনার টাকাও জোগাড় করতে পারতেন না অনেক সময়। তবে আর্থিক বাধাকে তুচ্ছ প্রমাণ করে স্থানীয় মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে হাসনাত। এরপর উত্তরপ্রদেশে সাহারানপুর পাড়ি দেয় সে। লক্ষ্য পড়াশোনা। এসটিএফের দাবি, সেখানেই ভারতের আল কায়েদা জঙ্গি সংগঠন ‘আকিস’-এর নেতারা তার মগজধোলাই করে। বাংলাদেশি আকিস জঙ্গি ফয়জল আহমেদ ওরফে শাহিদ মজুমদারকে জেরা করে তার সন্ধান মেলে। এরপরই আধিকারিকরা হাসনাতকে গ্রেপ্তার করে।
[আরও পড়ুন: ‘পুরুষ দেহরক্ষীকে যৌননিগ্রহ, জানাজানির ভয়ে খুন’, নাম না করে ফের শুভেন্দুকে নিশানা তৃণমূলের]
তবে হাসনাতের জঙ্গিযোগের কথা মানতে পারছেন না কেউ। প্রতিবেশীদের দাবি, ছোট থেকে অত্যন্ত মিশুকে হাসনাত। সারাক্ষণ পড়াশোনা নিয়েই থাকত সে। মেধাবি ছিল হাসনাত। তাই পড়াশোনার সুবাদেই স্থানীয় মাদ্রাসায় পড়ার পর উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুরে পাঠানো হয় তাকে। হাসনাতের মা-ও অবাক। ছেলে কবে জঙ্গি সংগঠনে যোগ দিল, তা তাঁর জানা নেই বলেই দাবি। হাসনাত কোনওদিন বাংলাদেশে যায়নি বলেও জানান ধৃতের মা। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান হানিফ আলি নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
হাসনাত আদৌ জঙ্গি সংগঠনের হয়ে ঠিক কী কাজ করত, তা জানা যায়নি। তদন্তকারীরা ধৃতকে জেরা করে তথ্যের খোঁজ চালাচ্ছেন। তবে গ্রেপ্তারির কথা শুনে তাজ্জব হাসনাতের পরিবার এবং প্রতিবেশীরা। হাসনাতের বাড়িতে ভিড় জমিয়েছেন সকলে। সর্বত্র পাড়ার মেধাবী ছেলের গ্রেপ্তারি নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। প্রকৃত তদন্ত হোক, সকলেই মুখে মুখে ফিরছে একই দাবি।
[আরও পড়ুন: ‘ডোন্ট টাচ মাই বডি’ পোস্টার নিয়ে হাজির তৃণমূল, পালটা বিক্ষোভ বিজেপির, ধুন্ধুমার বিধানসভা]
Source: Sangbad Pratidin