অর্ণব আইচ: মোবাইলের স্ক্রিনে পড়েছিল ভাড়াটে খুনির ছায়া। দেখেছিলেন পিছন থেকে মাথায় রড দিয়ে মেরে তাঁকে খুনের চেষ্টা হচ্ছে। বরাতজোড়ে প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন রাজদীপ। দুই নাবালক খুনের ঘটনার পরই প্রকাশ্যে এল সেই তথ্য। প্রায় ৬ মাস আগে অর্থাৎ ফেব্রুয়ারিতে ভাড়াটে খুনি দিয়েই ওই যুবককে খুনের চেষ্টা করেছিল সত্যেন্দ্র। এখানেই প্রশ্ন, তবে অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরী কি ‘সাইকো’?
পুলিশের অভিমত, সুস্থ মস্তিষ্কের কোনও মানুষ এই কাজ করতে পারে না। রাজদীপও পাওনা টাকা চাইতে এসেছিল সত্যেন্দ্রর কাছে। পুলিশ ও এলাকা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে কেষ্টপুরের (Kestopur) জগৎপুরে সত্যেন্দ্রর শোরুম থেকে একটি বাইক কেনার পরিকল্পনা করেন ওই এলাকারই দীনেশ ঘোষের ছেলে রাজদীপ ঘোষ। তার জন্য ২৩ হাজার টাকা আগাম চেয়েছিল সত্যেন্দ্র। তিনি তাকে ওই টাকা দেন। একটি বাইক তাঁকে দেখানো হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাইক তাঁকে দেওয়া হয়নি। খবর নিয়ে রাজদীপ জানতে পারেন যে, ওই বাইকটি মোটা টাকায় অন্য একজনকে বিক্রি করে দিয়েছে সত্যেন্দ্র। এবার তিনি টাকা ফেরৎ চান।
[আরও পড়ুন: ‘MP, MLA-রা নিজেদের তহবিলের টাকা খরচ করুন আবাস যোজনায়’, গাইডলাইন মমতার]
রাজদীপের বাবা দীনেশবাবুও তাঁকে বলেন, ২৩ হাজার টাকা ফেরৎ দিতে। সত্যেন্দ্র হাসিমুখে টাকা ফেরতের প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু কেউ বুঝতে পারেননি তার আসল অভিসন্ধি। দুই নাবালক খুনের পর এই রহস্যটি সামনে আসে। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি টাকা ফেরৎ দেওয়ার নাম করে রাজদীপকে জগৎপুরের ন’নম্বরে নিজের ভাড়ার ফ্ল্যাটে ডেকে পাঠায় সত্যেন্দ্র। তার আগে স্ত্রী পূজা ও মেয়েকে পাঠিয়ে দেয় বাপের বাড়িতে। সতেন্দ্র ও রাজদীপ নিজের মুখোমুখি বসে কথা বলতে শুরু করেন। রাজদীপের পিছনে ছিল একজন। পরে তিনি জানতে পারেন যে, ওই অপরিচিত যুবক আসলে হাওড়ার জগাছার বাসিন্দা। ভাড়াটে খুনি হিসাবে তাকে নিয়োগ করা হয়েছিল।
বাইকের ‘শকার পাইপ’ রড হিসাবে ব্যবহার করার জন্য ওই ভাড়াটে খুনির হাতে তুলে দেয় রাজদীপ। কথা বলার সময়ই সেই রড নিয়ে পিছন থেকে এগিয়ে রাজদীপকে আঘাত করতে যায় সেই ভাড়াটে খুনি। রাজদীপের হাতে ছিল মোবাইল। মোবাইলের স্ক্রিনে ছায়া পড়ে খুনির। রাজদীপ পিছনে হাত ছড়িয়ে বাধা দিয়ে তাকে নিরস্ত করেন। বেগতিক বুঝে রড লুকিয়ে ফেলে সে। বিষয়টি লঘু করার জন্য রাজদীপ তাদের দু’জনকে নিয়েই নেমে যান। চায়ের দোকানে গিয়ে চাও খাওয়ান। কিন্তু প্রমাণ ছিল না বলে পাড়ার ‘জামাইবাবু’ সতেন্দ্রর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে পারেননি। এই বিষয়টি জানার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: মদন এসেছে? রাজনীতি থেকে ‘অবসর’ জল্পনার মাঝেই বিধায়কের খোঁজ নিলেন মমতা]
Source: Sangbad Pratidin