সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত আরএসএস, বজরং দল এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের শীর্ষ আধিকারিকরা। বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন আরএসএসেরই (RSS) প্রাক্তন স্বয়ং সেবক। এই মর্মে আদালতে একটি হলফনামা দাখিল করেছেন তিনি। যশবন্ত শিণ্ডে নামের ওই প্রাক্তন সংঘ প্রচারকের দাবি, রাজনৈতিক স্বার্থে ২০০৬ সালে নান্দেড় বিস্ফোরণের মতো ভয়ংকর সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালিয়েছে সংঘ। আরএসএস এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বহু শীর্ষ আধিকারিক নাকি এই সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত।
যশবন্ত শিণ্ডের (Yashwant Shinde) বক্তব্য, সেই ১৮ বছর বয়স থেকে তিনি সংঘের সঙ্গে যুক্ত। তাছাড়া বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বজরং দলের সঙ্গেও গভীর যোগাযোগ ছিল তাঁর। সেই সুবাদে এদের কাজকর্ম সম্পর্কে ভালমতো তথ্য আছে তাঁর কাছে। তাঁর দাবি, ২০০৬ সালের নান্দেড় বিস্ফোরণের নেপথ্যেও ছিল RSS, VHP এবং বজরং দল। এই মর্মে নান্দেড়ের বিশেষ সিবিআই আদালতে একটি হলফনামাও জারি করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের একজন শীর্ষ নেতা এবং মালেগাঁও বিস্ফোরণের এক অভিযুক্তকে নান্দেড় বিস্ফোরণ মামলায় যোগ করা হোক।
[আরও পড়ুন: ধানবাদের স্বর্ণ ঋণ প্রদানকারী সংস্থায় ডাকাতের হানা, পুলিশের এনকাউন্টারে মৃত ১ দুষ্কৃতী]
আরএসএসের ওই প্রাক্তন কর্মীর দাবি, নান্দেড় বিস্ফোরণের ৩ বছর আগেই সংঘের এক শীর্ষ নেতা তাঁকে জানিয়েছিলেন, তাঁকে একটি সন্ত্রাসবাদ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যেতে হবে। সংঘ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের ছক কষছে। সেসময় তিনি সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে জড়াতে চাননি। তবু এই ষড়যন্ত্র সম্পর্কে বিশদে জানার জন্য আরএসএস আধিকারিকদের সঙ্গে মিশে যান। প্রাক্তন ওই সংঘ কর্মীর আরও দাবি, সেসময় আরএসএসের স্বয়ংসেবকদের সন্ত্রাসবাদের ট্রেনিং দেওয়া হয়েছিল। ‘মিঠুন চক্রবর্তী’ ছন্দনামে রবি দেব নামের এক নেতা বোমা বিস্ফোরণের ট্রেনিং দিয়েছিল। ঘটনাচক্রে ওই সময় কয়েকবছরের মধ্যে মারাঠাওয়াড়া এলাকায় একাধিক বিস্ফোরণ হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই টার্গেট করা হয় মসজিদকে।
[আরও পড়ুন: করোনা লড়াইয়ে নয়া অস্ত্র, ভারত বায়োটেকের ন্যাজাল ভ্যাকসিনকে ছাড়পত্র কেন্দ্রের]
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে নান্দেড়ে এক আরএসএস কর্মীর বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণ হয়। ওই আরএসএস কর্মী এবং তাঁর দুই ছেলে যারা আবার বজরং দলের সদস্য, প্রাণ হারান ওই বিস্ফোরণে। এই মামলায় দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত করার পর সিবিআই কারও বিরুদ্ধে প্রমাণ পেশ করতে পারেনি। তবে তদন্তকারী সংস্থা জানায়, মসজিদে বোমা মারার জন্যই ওই আরএসএস কর্মীর বাড়িতে বোমাগুলি মজুদ করা ছিল। যশবন্ত শিণ্ডে নামের এই প্রাক্তন আরএসএস কর্মী জানান, সংঘের নেতারা যে মসজিদে সন্ত্রাসবাদী হামলা চালত, সেটা জানা ছিল আরএসএসের শীর্ষ নেতাদেরও। তিনি নিজে সংঘপ্রধান মোহন ভাগবতকে (Mohan Bhagwat) এ বিষয়ে সতর্ক করেন। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। বিজেপিকে রাজনৈতিকভাবে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্য নীরব থাকেন সংঘের নেতারা।
Source: Sangbad Pratidin