সুব্রত বিশ্বাস: রেলের নথিতে ‘মেশিন পার্টস’। আদপে বুকিং করা প্যাকিংয়ের ভিতর সোনা, রুপো-সহ নানা সরঞ্জাম চলে যাচ্ছে অবলীলায়। ওষুধ বলে বিস্ফোরকের প্যাকিংও খুব সহজেই বেরিয়ে যায় রেলের পার্সেলের মাধ্যমে। এই বিপজ্জনক খেলা এবার বন্ধ করছে রেল। এজন্য এবার পার্সেলগুলিতে লাগানো হচ্ছে ‘কার্গো স্ক্যানার’।
এতকাল যাত্রী সামগ্রীর উপর শ্যেনদৃষ্টি রাখতে বড় স্টেশনগুলিতে লাগানো হয়েছিল লাগেজ স্ক্যানার। এবার দূরপাল্লার বগিতে যাতায়াতকারী পার্সেলের উপর রাখা হবে নজর। এজন্য একেবারে বিমানবন্দরের ধাঁচে পার্সেলের প্রবেশদ্বারে বসানো হবে এই কার্গো স্ক্যানার। পূর্ব রেলের গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন হাওড়া, শিয়ালদহ, কলকাতা, আসানসোল, মালদহের পার্সেলের গেটে বসবে এই কার্গো স্ক্যানার। পূর্ব রেলের আরপিএফের আইজি পরম শিব জানান, আগামী দু’একদিনের মধ্যে টেন্ডার ডাকার কাজ শুরু হবে। খুব শিগগির এই পরিষেবা চালু হবে। এক একটি কার্গো স্ক্যানারের দাম পড়বে ৮০ থেকে ৯০ লক্ষ টাকা।
[আরও পড়ুন: ‘কোনও DA বকেয়া নেই’, পুজোর অনুদান মামলায় হলফনামা রাজ্যের]
প্রতিদিন এক একটি বড় স্টেশনে প্রায় দেড় থেকে দু’হাজার টন পণ্য বুকিং হয়ে ট্রেনে যায়। এসএলআর, ভিপি দুই ধরনের পার্সেল বগিতে এই পণ্য যাতায়াত করে বলে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে। এত পরিমাণ পণ্য যাতায়াত করলেও তার প্রকৃত তথ্য রেলের কাছে থাকে না বলে জানা গিয়েছে। কারণ, ব্যবাসায়ীরা পণ্য প্যাকেট করেই বুকিং করতে আসেন। সেই প্যাকেট খুলে মালের তথ্য সংগ্রহ করা রেলের ঘরে ‘কঠিন কাজ’ বলে মনে করা হয়। তাই ‘অ্যাজ পার ফরোয়ার্ডিং ডিক্লারেশন’ কথাটি লিখেই দায় সারা হয়।
আর এই আইনের ফাঁক গলে সোনা, রুপোর মতো মূল্যবান অলঙ্কার হয়ে যাচ্ছে নিছক মেশিন পার্টস। বিস্ফোরক থেকে আগ্নেয়াস্ত্র সবই ‘মিস ডিক্লারেশন’ দিয়ে চলে যাচ্ছে রেলে। এই বিপজ্জনক পন্থা বন্ধে তৎপর হয়েছে রেল বলে রেলের সুরক্ষা আধিকারিকরা মনে করেছেন। বৃহদায়তনের স্ক্যানারের এক্স—রে সিস্টেমে পর্দায় ভেসে উঠবে বুকিং প্যাকেটে কী রয়েছে। তার উপর নজর থাকবে আরপিএফের বলে জানা গিয়েছে। এই ধরনের লাগেজ ভ্যানের অধিকাংশই এখন লিজে দেওয়া হয়েছে। ফলে যা খুশি তাই বুকিং করা হয় পার্সেলে বলে অভিযোগ উঠেছিল বারবার। এবার তা বন্ধ হবে বলে মনে করেছেন রেলের আধিকারিকরা।
[আরও পড়ুন: পুজোর আগে TET উত্তীর্ণ আরও ৫৪ জনকে নিয়োগের নির্দেশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের]
Source: Sangbad Pratidin