সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এনসিআরবির রিপোর্ট বলছে, ধর্মীয়, জাতিগত বা জন্মস্থানের ভিত্তিতে অপরাধের নিরিখে দেশের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ। যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে এ ধরনের গ্রেপ্তারির সংখ্যা সর্বোচ্চ। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী নিজে সেসব পরিসংখ্যানের পরোয়া না করে সদর্পে ঘোষণা করে দিলেন, তাঁর শাসনে গত সাড়ে পাঁচ বছরে একটিও দাঙ্গা হয়নি। উত্তরপ্রদেশ এখন দাঙ্গামুক্ত রাজ্য এবং বিনিয়োগকারীদের পছন্দের জায়গা।
শনিবার বিজনৌরে ২৬৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের সূচনা করেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই তিনি বলেন, “উত্তরপ্রদেশ এখন পুরোপুরি দাঙ্গামুক্ত এবং অপরাধমুক্ত রাজ্য। গত পাঁচ বছরে রাজ্যে একটিও দাঙ্গা হয়নি। রাজ্যে প্রচুর বিনিয়োগ এবং কাজের সুযোগ এসেছে। রাজ্যজুড়ে এখন শুধু হাইওয়ে আর এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি হচ্ছে।” যোগীর দাবি, শিল্পপতিদের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হয়, এমন কোনও পরিস্থিতি তিনি তৈরি হতে দেবেন না। NCRB’র রিপোর্ট তুলে ধরে যোগী বলছেন, তাঁর আমলে রাজ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়নি। শুধুই মানুষের উন্নতিকল্পে কাজ হচ্ছে। অথচ সেই এনসিআরবির রিপোর্টেই যেখানে ধর্মীয়, জাতিগত বা জন্মস্থানের ভিত্তিতে হিংসার প্রসঙ্গ রয়েছে, সেই অংশটি বাদ দিয়ে গিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী।
[আরও পড়ুন: ‘TET নেবেন না, আত্মহত্যা করব’, নিয়োগ তৎপরতা শুরু হতেই পর্ষদ সভাপতিকে হুমকি উত্তীর্ণদের]
বস্তুত, সাড়ে পাঁচ বছর আগে যোগী আদিত্যনাথ যখন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেন, তখন নিন্দুকেরা রাজ্যের সংখ্যালঘুদের নিয়ে রীতিমতো উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। যোগীর শাসনে উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh) দাঙ্গা-হাঙ্গামা রোজকার ঘটনা হয়ে দাঁড়াবে, আশঙ্কা করছিলেন তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের একটা বড় অংশ। কিন্তু যোগীর মুখ্যমন্ত্রিত্বের সাড়ে পাঁচ বছর পর নাকি পুরোপুরি অন্য ছবি দেখা যাচ্ছে। যোগীর এই দাবি যদি সত্যি হয়, তাহলে নিঃসন্দেহে তা বড় সাফল্য। কারণ, যোগী আদিত্যনাথ যেসময় উত্তরপ্রদেশের ক্ষমতায় এলেন তখন রাজ্যের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক অশান্তির আবহ। মুজফফরপুর দাঙ্গার স্মৃতি তখনও টাটকা। সেখান থেকে গোটা রাজ্যে শান্তি ফেরানোটা সত্যিই কৃতিত্বের।
[আরও পড়ুন: পুজোর আগে বিদ্যুতের তার মেরামতি করতে গিয়ে অঘটন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু কর্মীর]
কিন্তু সত্যিই কি যোগীর করা দাবির সারবত্তা আছে? সেটা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। বস্তুত যোগীর আমলে উত্তরপ্রদেশে বড় কোনও দাঙ্গার ঘটনা না ঘটলেও সংখ্যালঘুদের মধ্যে একটা অজানা ভীতি যে কাজ করছে, সেটা অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই বলেই মনে করেন স্থানীয়রা। তাছাড়া, যোগীরাজ্যে ধর্মীয় কারণে ছোটখাট অনেক হিংসার ঘটনাই ঘটছে। যা হয়তো জনসমক্ষে আসছে না।
Source: Sangbad Pratidin