সুকুমার সরকার, ঢাকা: মায়ানমারে ফের সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে রোহিঙ্গা জঙ্গিরা। ফলে শরণার্থী ঢলের আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন বাংলাদেশের সরকার। এমনিতেই প্রায় ১১ লক্ষ রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দিয়ে চাপের মুখে পড়েছে দেশের অর্থনীতি। এবার মায়ানমার থেকে আরও শরণার্থীর এলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে বলে মনে করছে ঢাকা।
সূত্রের খবর, মায়ানমারের (Myanmar) সেনাবাহিনীর সঙ্গে ফের লড়াই শুরু করেছে রোহিঙ্গা জঙ্গি সংগঠন ‘আরাকান সালভেশন আর্মি’। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি গ্রামের রোহিঙ্গাদের এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে খবর। এর ফলে আবার বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ঢলের আশঙ্কা করা হচ্ছে। মায়ানমার সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির সংঘাতের উপর নজর রাখা গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই বিষয়ে এখনই কোনও পদক্ষেপ না করা হলে বার্মিজ সেনার নির্যাতনের মুখে নতুন করে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা ভিটেমাটি হারাতে পারে। আর এই উদ্বাস্তুদের অধিকাংশের গন্তব্য হবে বাংলাদেশ। ফলে নতুন করে বাংলাদেশকে আরও সমস্যায় পড়তে হবে।
[আরও পড়ুন: তিস্তা চুক্তিই অগ্রাধিকার, হাসিনার আসন্ন ভারত সফরে মোদির সঙ্গে বৈঠকে বাণিজ্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা]
মংডুতে বসবাসরত কয়েকজন রোহিঙ্গা (Rohingya) মোবাইল ফোনে অভিযোগ করে বলেন, আরাকান আর্মির সঙ্গে যুদ্ধের বাহনা করে রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত করতে চাইছে মায়ানমার। সেনাবাহিনী তাঁদের এলাকাগুলি একে একে ঘিরে ফেলছে। কক্সবাজার ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গা নেতারাও একই কথা বলছেন। এই প্রসঙ্গে বাংলাদেশের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, “মায়ানমারের অভ্যন্তরে যা হচ্ছে-সে ব্যাপারে আমরা খোঁজখবর রাখছি। নতুন করে একজন রোহিঙ্গাও যেন বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে সেজন্য বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি), কোস্টগার্ড-সহ সংশ্লিষ্টদের কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা আর কোনও রোহিঙ্গাকে দেশে ঢুকতে দেব না। আর বোঝা বহন করা সম্ভব নয়।”
শরণার্থী সমস্যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শরণার্থীদের ফেরত নিতে গড়িমসি করছে মায়ানমার। ফলে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের অনেকেই অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছে। এনিয়ে তাদের মধ্যে হতাশা কাজ করছে। ঢাকায় গণভবনে রাষ্ট্রসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “১১ লক্ষেরও বেশি বাস্তুচ্যুত মায়ানমারের নাগরিক বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার কারণে গভীর বনভূমি কক্সবাজারের উখিয়ার পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। তারা গাছ কেটে বনভূমি হ্রাস এবং এলাকার পরিবেশগত বিপর্যয় সৃষ্টি করছে। এছাড়া প্রতি বছর ৪৫ হাজার রোহিঙ্গা শিশুর জন্ম হচ্ছে।” সবমিলিয়ে, পরিস্থিতি যে অত্যন্ত জটিল তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
[আরও পড়ুন: হাসিনাকে হত্যার চক্রান্ত! উত্তাল বাংলাদেশের সংসদ]
Source: Sangbad Pratidin